মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তার টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে, এটি ঘুষ লেনদেনের ভিডিও নাকি সরকারি কোন কাজের ফিস, এটি এখনো পরিস্কার নয়।এক মিনিট ৫ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, একজন সেবা গ্রহীতার কাছ থেকে শিবচর উপজেলা ভুমি অফিসের পেশকার লিটন বিশ্বাস এক হাজার টাকার একটি নোট নিচ্ছেন। তবে এটি কিসের টাকা এটি পরিস্কার নয়। এদিকে খবির মোল্লা নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করা হয়েছে বলে শোনা গেলেও তার কোনও অভিযোগ নেই বলে জানা গেছে।লাইসেন্স প্রত্যাশী খবির মোল্লা জানান, তিনি কোথায় কোন অভিযোগ দেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছিল সেটা স্থানীয় এক সাংবাদিক তার কাছ থেকে কৌশলে স্বাক্ষর করে নেয়। যা প্রত্যাহারও করা হয়েছে। এছাড়া লিটন বিশ্বাসকেও তিনি কোন ঘুষ দেননি। এমনকি ভুমি অফিসের নাজির লিটন বিশ্বাস তার কাছে কোন ঘুষ চানওনি। এটি পুরোটাই সাজানো। লাইসেন্স পাওয়ার ব্যাপারে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, স্যারদের সাথে কথা হয়েছে, দুই-একদিনের মধ্যে লাইসেন্স পেয়ে যাবে। মূলত করোনা মধ্যে লাইসেন্সের আবেদন দিয়েছিলাম। আমি তিনমাস আগে অফিসে এসেছিলাম, এরমধ্যে আর কোন খোঁজখবর নেয়নি। এজন্য দেরি হয়েছে।অভিযুক্ত লিটন বিশ্ববাসের দাবি, তাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। এটি মূলত নামজারি খারিজের টাকা ১ হাজার ১৫০ টাকা এক তহসিলদার কাছ থেকে নিয়েছিলাম। আর, খবির মোল্লা নামে যার নাম বলে এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে সেই ব্যক্তি আমাকে চিনেও না। তিনি এ ব্যাপারে কোথায়ও কোন অভিযোগ দেন নাই। যেই অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, সেই অভিযোগ মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) তিনি প্রত্যাহারও করেছেন। তাহলে ভিডিওটিতে কার কাছ থেকে টাকা গ্রহন করেছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, অফিসে তো কত লোকজনই আসেন। কে কবে টাকা দিয়েছে এটি বলা কষ্টসাধ্য।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিবচর উপজেলা ভুমি সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রকিবুল হাসান বলেন, খবির মোল্লা নামে এক ব্যক্তি বনবিভাগের একটি লাইসেন্স পাওয়ার জন্য উপজেলা ভুমি অফিসে আবেদন করেন। মূলত এটি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করার কথা। এমনকি এটি প্রদান করার এখতিয়ার জেলা প্রশাসকের। কিন্তু সরেজমিন পরিদর্শণ শেষে রিপোর্ট প্রদান করা হবে বলে তাকে জানানো হয়। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবেদনকারীর কাছ থেকে কৌশলে স্বাক্ষর করে তার এক আত্মীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ঘুষ লেনদেন কথা বলে একটি অভিযোগ দেন। আসলে খবির মোল্লা এ ব্যাপারে কিছুই জানেননা। পরে তিনি এই অভিযোগ প্রত্যাহারও করেছেন।মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, এটি ঘুষ লেনদেনের ভিডিও নাকি অন্য কোন ঘটনা এটি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষী হলে কেউ ছাড় পাবেনা।জানতে চাইলে শিবচর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জান মুঠোফোনে বলেন, ওই ভিডিওটা আমরা দেখেছি। তাছাড়া ঘুষ দেওয়ার বিষয় খবির মোল্লা আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল। পরে সে অভিযোগ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন জানালেও আমরা তার প্রথম অভিযোগটি আমলে নিয়ে ওই ভূমি অফিসের স্টাফ লিটন বিশ্বাসকে শোকজ করেছি। তিনি তার জবাব আজ বিকেলে দিয়েছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।