প্রতিবছরের মতো এবারও ২১শে ফেব্রুয়ারিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে উদযাপনের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে দিবসের কর্মসূচি বিষয়ক এক আন্ত মন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কর্মসূচি গৃহীত হয়।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২১শে ফেব্রুয়ারি দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনসমূহে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। ভাষাশহীদদের স্মরণে দেশের সব শহীদ মিনারে রাত ১২.০১ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যেসব উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে, সেখানে তাদেরকে একুশের অনুষ্ঠানমালায় সম্পৃক্ত করা হবে। আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরআনখানির আয়োজনসহ দেশের সব উপাসনালয়ে ভাষাশহীদদের রুহের মাগফেরাতের জন্য প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় কর্মসূচি প্রণয়নও চূড়ান্ত করবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং দিবসটি পালনে নিয়োজিত সব প্রতিষ্ঠান ও সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারকরণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন উপলক্ষে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ঢাকা মহানগরীতে ট্রাকের মাধ্যমে রাজপথে ভ্রাম্যমাণ সংগীতানুষ্ঠান এবং নৌযানের সাহায্যে ঢাকা শহর সংলগ্ন নৌপথে সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজনসহ জেলা-উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর তিন ধরনের পোস্টার মুদ্রণ করবে, যার মধ্যে প্রথমটি হবে সর্বজনীন, দ্বিতীয়টি স্কুল-কলেজের শিশু-কিশোরদের জন্য এবং তৃতীয়টি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ ও বাংলাদেশে অবস্থিত বৈদেশিক দূতাবাসসমূহে প্রচারের জন্য।
বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, আরকাইভস্ ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক একাডেমি, বিরিশিরি, নেত্রকোনা, রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বইমেলা, আলোচনাসভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, সুন্দর হাতের লেখা ও রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন দপ্তর-সংস্থাগুলো জাতীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করে দিবসটি উদযাপন করবে। তা ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও অধীনস্থ শাখা জাদুঘরগুলো, শিল্পাচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সব প্রত্নস্থল ও জাদুঘরগুলোতে শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (অটিস্টিক) শিশুদের বিনা টিকেটে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন