মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার ফক্স নিউজে সম্প্রচারিত এক ভাষণে বলেছেন, সরকারি চাকরি ছাঁটাইয়ের দায়িত্বে থাকা ইলন মাস্ক ফেডারেল সংস্থাগুলোতে ‘শত শত বিলিয়ন ডলারের জালিয়াতি’ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবেন।
ট্রাম্প জানান, খরচ কমানোতে প্রেসিডেন্টের প্রচেষ্টার নেতৃত্বে থাকা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে বড় ধরনের সাহায্য করবেন।
সুপার বোল ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের আগে সম্প্রচারিত ফক্স নিউজে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, মার্কিন জনগণ চায় ‘আমি যেন অপচয় খুঁজে পাই।’
ট্রাম্প ফক্স নিউজ চ্যানেলের ব্রেট বেয়ারকে বলেন, ‘আমরা কোটি কোটি, শত শত বিলিয়ন ডলারের জালিয়াতি ও অপব্যবহার খুঁজে বের করতে যাচ্ছি এবং আপনি জানেন, জনগণ আমাকে সেই ভিত্তিতে নির্বাচিত করেছে।
ক্ষমতা গ্রহণের তিন সপ্তাহকালে প্রেসিডেন্ট ফেডারেল ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। তিনি ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির (ডিওজিই) অধীনে তার ফেডারেল ব্যয় কমানোর প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য স্পেসএক্স ও টেসলার প্রধান ইলন মাস্ককে নিযুক্ত করেছেন।কোনো ব্যাপক অবৈধ কার্যকলাপ বা জালিয়াতির প্রমাণ না মিললেও প্রশাসনের তুলে ধরা বেশ কয়েকটি সরকারি প্রকল্প বন্ধ করা বা কমানো উচিত বলে মনে করছেন ট্রাম্প। মাস্ক ইতিমধ্যে মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) বন্ধ করার জন্য নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছেন।
সংস্থাটির হাজার হাজার কর্মচারীকে ছাঁটাই করেছেন তিনি। একজন ফেডারেল বিচারক শুক্রবার ইউএসএআইডির বেতনভুক্ত দুই হাজার ২০০ কর্মীকে ছুটিতে পাঠানোর প্রশাসনের পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প সংস্থাটিতে ‘জালিয়াতির’ অভিযোগ করে দাবি করেন, ‘কোটি কোটি ডলার অর্থ এমন জায়গায় যাচ্ছে, যেখানে তা যাওয়া উচিত নয়।’
ডিওজিই সংস্কার দল মার্কিন ট্রেজারির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্যে প্রবেশাধিকার পেয়ে সমালোচকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
পেন্টাগনের ব্যয় পর্যালোচনার জন্যও তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। পেন্টাগনের বাজেট প্রতিবছর এক ট্রিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া অর্থবছরের জন্য ৮৯৫ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা ব্যয় অনুমোদনের একটি বিলে স্বাক্ষর করেছিলেন।
এ ছাড়া ট্রাম্প কানাডাকে সংযুক্ত করার একটি পরিকল্পনার ওপর ফের জোর দিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়া অনেক ভালো হবে, কারণ আমরা কানাডায় বছরে ২০০ বিলিয়ন ডলার হারাচ্ছি।’
প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠানের পর থেকে ট্রাম্প দৈনিক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বিলিয়ন ডলারকে মার্কিন ‘ভর্তুকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেছেন, এটি ছাড়া কানাডা ‘একটি কার্যকর দেশ’ থাকবে না।
পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসন ও যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইল পাচার রোধে কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে চুক্তি করার পর ট্রাম্প উভয় দেশের সব আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন।সূত্র : এএফপি