গতকাল বুধবার যৌথ অভিযানের প্রথম দিন কী পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে তা জানাতে পারেনি পুলিশ সদর দপ্তর। তবে আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানা যাবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অভিযানের আগে পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অস্ত্র, গোলা বারুদসহ লুণ্ঠিত অন্য সরঞ্জামের প্রায় অর্ধেকই জমা পড়েনি। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, ১১ ধরনের মোট পাঁচ হাজার ৮২৯টি অস্ত্র লুট হয়, এর মধ্যে তিন হাজার ৬৩টি জমা দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবারই শেষ হয়েছে সব ধরনের অস্ত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা। উদ্ধার তালিকার মধ্যে বিভিন্ন থানা থেকে লুট করা অস্ত্র যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে লাইসেন্স স্থগিত করা বৈধ অস্ত্রও। গতকাল থেকে সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, পুলিশ, র্যাব ও আনসারের সমন্বয়ে যৌথ অপারেশন টিম গঠন করে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চালানো হচ্ছে।
অন্যদিকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কোর কমিটির মাধ্যমে স্থগিত করা লাইসেন্সের তালিকা পর্যালোচনার ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
এই কমিটিতে পুলিশ সুপার, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধি এবং অন্যান্য বাহিনীর সদস্য রয়েছেন।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়। নির্দেশ দেওয়া হয় ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার জন্য। এই সময়ের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দিলে তা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য হবে।
এ ছাড়া কোনো ব্যক্তির কাছে পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ থাকলে তা জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায় পুলিশ সদর দপ্তর। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্র সংরক্ষণ বা হেফাজতকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জেলা তথ্য অফিস প্রচার করবে।
অভিযানের আগে জমা দেওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, লুট হয়েছে পাঁচ হাজার ৮২৯টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র। এর মধ্যে এখনো দুই হাজার ৬৬টি অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।
গোলাবারুদের মধ্যে লুট হয় বিভিন্ন বোরের গুলি ছয় লাখ ছয় হাজার ৭৪২টি, যার মধ্যে এখনো উদ্ধার হয়নি তিন লাখ ২০ হাজার ৬৬০টি। লুট করা ৩১ হাজার ৪৪টি টিয়ার গ্যাসের সেলের মধ্যে এখনো উদ্ধারের বাকি আট হাজার ৯০৫টি। অন্য সরঞ্জামের ক্ষেত্রেও উদ্ধারের চিত্র প্রায় একই।