পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী লিলি বেগমের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার চোখের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার (০৯ আগস্ট) সকালে পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তরকালে এই নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান।
সকালে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের বাড়ি হস্তান্তর করার সময়ে লিলি বেগম প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার করুণ কাহিনি বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বেড়া উপজেলার সঙ্গে যুক্ত হন।
আধাপাকা বাড়িসহ দুই ডিসিমাল জমির মালিকানার দলিল পাওয়ার পর এক আলাপচারিতায় লিলি জানান, সাত বছর আগে তিনি হঠাৎ অন্ধ হয়ে যান এবং তার স্বামী সাত মাস বয়সী ছেলেসহ তাকে ছেড়ে চলে যান। তিনি ও তার পরিবার অন্যের বাড়িতে থাকতেন।
প্রধানমন্ত্রীকে লিলি আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, ‘আমি এখন আমার ছেলের সাথে বসবাস করছি।
আমার চিকিৎসার জন্য আমার বাবা সব বিক্রি করে দিয়েছেন।’
দেশের প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য জমি ও বাড়ি দেওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমি কখনোই ভাবিনি যে আমাদের নিজস্ব বাড়ি হবে। আপনি (শেখ হাসিনা) আমাকে বিদ্যুৎ, পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থাসহ আমার স্বপ্নের পাকা বাড়ি দিয়েছেন। আপনি ছাড়া কেউ এটি আমাদের দেবে না।
লিলি বলেন, ‘আমি আমার সন্তান এবং পিতা-মাতার সাথে এখন আপনার দেওয়া ঘরে বাস করছি। আমরা খুব খুশি, আমাদের এখন কোনো অসুবিধা নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আপনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ করেছেন, আপনি আমাদের গর্ব। আপনি শত বছর বেঁচে থাকুন এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী হয়ে বারবার আমাদের কাছে ফিরে আসুন।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, ‘আপনার চোখের চিকিৎসা কোথায় নিয়েছেন?’ উত্তরে লিলি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে চোখের শেষ চিকিৎসা নেওয়ার কথা বলেন।
লিলি বলেন, ‘কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি, আর্থিক সংকট এবং আমার হাঁটুর জয়েন্টে অর্থোপেডিক সমস্যার কারণে আমি আর চিকিৎসা নিতে পারিনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় চক্ষুবিদ্যা ইনস্টিটিউটের চিকিৎসককে দেখালে ভালো হতো।’
এ সময় পাবনার জেলা প্রশাসক এম আসাদুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। বিস্মিত লিলি বেগম তার মা-বাবার মতো তার চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী লিলি বেগমকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা আপনার চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। আমরা চেষ্টা করব।’