লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্র রবিউল ইসলাম শিমুল (১৪) হত্যা মামলায় ছয়জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ রহিবুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। একইসঙ্গে প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার আসামি তাজুল ইসলাম তাজু ভূঁইয়া’কে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের দেওপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে ইলিয়াস, সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামের মাসুদুর রহমান (কালা মাসুদ), উত্তর জামিরতলী গ্রামের নুর মোহাম্মদ লিটন, পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের সাদ্দাম, আনোয়ার হোসেন সাদ্দাম ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমান উল্যাহপুর ইউনিয়নের গোবিন্দের খিল গ্রামের শাহরিয়ার রাশেদ।
খালাসপ্রাপ্ত তাজু ভূঁইয়া চন্দ্রগঞ্জের আমানী লক্ষ্মীপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে ও চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্যসচিব।
ভিকটিম শিমুল প্রতাফগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। শিমুলের বাবা আব্দুর রাজ্জাক ও মা শিরিন আক্তার মারা যাওয়ার পর থেকে সে নানার বাড়িতে বসবাস করেন।
এজাহার সূত্র থেকে জানা যায়, ভিকটিম শিমুল বাদী কাজী মামুনুর রশীদ বাবলুর ভাগিনা। ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল বাবলু অসুস্থ হয়ে লক্ষ্মীপুরে একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বাড়িতে তার মা-ভাবি ও ভাগনে ছিলেন। ওইদিন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে অস্ত্রধারী মুখোশধারীরা চন্দ্রগঞ্জ দেওপাড়া গ্রামের বাড়িতে ঢুকে। তাদের ভয়ে তার মা ও ভাবি পালিয়ে যায়। কিন্তু এতিম ভাগনে শিমুল পালায়নি। তখন সন্ত্রাসীরা ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করলে শিমুল বাধা দেয়। এতে তারা তাকে তুলে নিয়ে দেওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় গুলি করে হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার ১৪ দিন পর ৫ মে বাবলু বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সবশেষ প্রায় ৬ বছর পর ২০২০ সালের ৪ মার্চ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালী কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. আনোয়ার উল ইসলাম আদালতে ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ইলিয়াস আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য ৫ জন পলাতক রয়েছেন।