লক্ষীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার ৯ নং চর গাজী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে দক্ষিণ টুমচর গ্রামের মীর সমাজে পাঁচ সন্তানের জননীকে হত্যার উদ্দেশ্য কুপিয়ে কুপিয়ে ক্ষত বিক্ষত করেছে তারই সাবেক স্বামী হেলাল।
এই ঘটনায় রামগতি থানায় ভুক্তভোগী নারী রহিমার ভাই ইলিয়াস এজাহার দায়ের করেন, যাহার নং ৭০৬৩ তাং ১/১২/২২ইং।
গত ২৯ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর রাতে রহিমা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে উঠলে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা হেলাল তাকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
রহিমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে হেলাল পালিয়ে যায়।
এসময় রহিমাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার জানান মাথা, মুখ, পিঠ, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ২২টি কোপ মারে হেলাল।
অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
জানা যায় রহিমা ও হেলাল দম্পতির ২০ বছরের সংসারে ২ কণ্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
বড় মেয়ে তাহমিনা(১৮) ফেনী শহরে বাসায় কাজ করে।
ছোট মেয়ে সুমি (১৬) সেও ফেনী শহরে বাসায় কাজ করে।
বড় ছেলে মোহাম্মদ( ১০) মেঝো ছেলে মোবারক(৮) এবং ছোট ছেলে( ৫) তাদের মায়ের কাছেই থাকে।
হঠাৎ করে হেলাল দ্বিতীয় বিয়ে করে একই গ্রামের হাশেম ডাকাতের মেয়ে সহিদাকে।
সহিদার বড় ভাই জহির ডাকাত পুলিশের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হয়।
সহিদার প্রথম স্বামীও পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।
ডাকু সহিদা টার্গেট করে রহিমার তিলে তিলে সাজানো সংসার। রহিমাকে তার সাজানো সংসার থেকে বের করে দিয়ে সেখানে গাপটি মেরে বসে ডাকু সহিদা।
এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় রহিমা ফিরে পায় তার ঘর।
তার তিন শিশু পুত্র নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দুঃখে কষ্টে দিন কাটতে থাকে।
তার সাবেক স্বামী হেলাল পেশায় ব্রিকফিল্ড শ্রমিক। সহিদাকে বিয়ে করার পর থেকেই নানান ভাবে নির্যাতন করতে থাকে।
রহিমার চিৎকারে ছুটে আসা প্রতিবেশী স্বপ্না জানান রহিমার চিৎকারে ছুটে এসে দেখি সে জ্ঞান হারিয়ে উঠানে পড়ে আছে, হেলাল পালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের চিৎকার শুনে মহিন উদ্দিন হুজুরসহ অন্যন্যরা ছুটে এসে রহিমাকে উদ্ধার করে মাইজদী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে চর গাজী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তৌহীদুল ইসলাম সুমন জানান, দীর্ঘদিন থেকে হেলাল রহিমার উপর অত্যাচার করে আসছে। তাকে কুপিয়ে জখম করার পর উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তাকে চিকিৎসার জন্য আমি ঢাকায় গিয়ে সহযোগিতা করবো।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘটনার পর প্রধান আসামী পালিয়ে যায়। তাকে গ্রেপ্তার করতে সব ধরনের প্রচেষ্ঠা চলছে।