Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
রাজশাহী বাজারে রোজার সামগ্রী পণ্যে আগুন
--প্রেরিত ছবি

রাজশাহী বাজারে রোজার সামগ্রী পণ্যে আগুন

স্টাফ রিপোর্টার (রাজশাহী):
গতকাল চাঁদ দেখা গেছে আজ  থেকে শুরু পবিত্র রমজান মাস। রমজান শুরুর আগেই বাজারে রোজার সামগ্রী সব পণ্যতে লেগেছে আগুন। স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না কোনো পণ্যে। ক্রেতারা প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য বাজারে এসে দাম শুনে নাভিশ্বাস উঠছে। বেশিরভাগ পণ্যের দর বেড়ে যাওয়ায় স্বস্তি পাচ্ছেন না ক্রেতারা।
রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। ক্রেতাদের অভিযোগ, সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে বেড়েছে সব পণ্যর দাম। রমজানের শুরুতে খেজুর, ছোলা, ডাল, চিনিসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম অনেকটাই বেড়েছে। যা অনেকটা নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে এখন এক কেজি সাধারণ মানের জিহাদী খেজুরের দাম ৩০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও ছিল ২০০ টাকা কেজি। গত বছর রোজায় এ খেজুরের দাম ছিল ১২০-১৫০ টাকা কেজি। এছাড়া ভালো মানের খেজুর ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। যা গত রমজানের থেকে ৫০০ টাকা বেশি।
অন্যদিকে, রমজানের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে। গেল বছর বাজারে এ সময় ছোলার কেজি ছিল ৯০ টাকা। সেই হিসেবে এবার কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। একইভাবে পিঁয়াজির তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় খেসারি ডালের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। আগেরবার ছিল ৮০ টাকা কেজি।
এছাড়াও ডালের মধ্যে প্রতি কেজি মোটা, মাঝারি ও সরু দানার মসুর ডাল ১১০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতি কেজি অ্যাঙ্কর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। আর মুগ ডালের কেজি পড়ছে ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা।
বাজারে গেল বছর এ সময় প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। এখন কিনতে হলে ভোক্তাকে গুণতে হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। চিনির কেজিতে এক বছরের ব্যবধানে ক্রেতাদের বেশি খরচ করতে হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
সাহেব বাজারের মুদি দোকানি ইউসুফ আলী বলেন, এবার রোজার অনেক আগেই থেকে ছোলা খেসারি ডালসহ অন্যান্য সব ডালের দাম চড়া। চিনির দাম এখনও বাড়েনি তবে বাড়তে পারে। তেলের দাম কমলেও নতুন দরে তেল বাজারে আছে। সব মিলে রোজার কোনো পণ্যের সুখবর নেই।
যদিও রোজায় পণ্যের দামের লাগাম টানতে সরকার গত ৮ ফেব্রুয়ারি খেজুর, চিনি, সয়াবিন তেল ও চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছিল। তবে সয়াবিন তেল ছাড়া অন্য তিন পণ্যে দাম সামান্যও কমেনি বরং বেড়েছে। সয়াবিন তেলেও সবাই সুফল পাচ্ছে না। কারণ বাজারে ১ মার্চ থেকে নতুন কম দামের সয়াবিন তেল সরবরাহ করার কথা থাকলেও এখনো বেশিরভাগ দোকানে পুরোনো দামের তেল বিক্রি হচ্ছে। কিছু দোকানে কম দরের পাঁচ লিটারের বোতল আসলেও এক বা দুই লিটারের বোতলের দেখা মিলছে না।
অন্যদিকে, রমজান এলেও কমছে না পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম। গতবছর রোজার আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। সেই দাম এখন প্রায় তিন গুণ। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। সেই হিসেবে এক কেজি পেঁয়াজে বেশি খরচ হবে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদা ২২০ থেকে ২৪০ টাকা ও রসুন ২২০ থেকে ২৬০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গত রমজান থেকে প্রায় প্রতি কেজি ১০০ টাকা বেশি।
তবে বাজারে ব্রয়লার মুরগির এখনো গত বছরের দামকে অতিক্রম করেনি। যদিও গত দুই দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। সেই সঙ্গে খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। গরুর মাংসের পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে প্রতি কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, সোনালি মুরগি ও কক মুরগিরও দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, মুলা প্রতি কেজি ২০ টাকায়, ঝিঁঙে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, পেঁয়াজের ফুল প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, বেগুন প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, পেঁপে প্রতি কেজি ৩৫ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৩৫, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০ টাকায়, টমেটো প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, ফুলকপি ২০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ৩০ টাকায়, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০, মটরশুঁটি প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, গাজর প্রতি কেজি ৪০ টাকায় ও শিমের বিচি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, চাষের শিং মাছ প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায়, রুই প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়, চাষের কৈ প্রতি কেজি ৩০০ টাকায়, দেশি ছোট কৈ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়, পাবদা প্রতি কেজি মানভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, শোল মাছ একটু বড় সাইজের প্রতি কেজি ৯০০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ টাকায়, কাতলা মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় ও টেংরা মাছ ছোট সাইজের প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply