স্টাফ রিপোর্টার (রাজশাহী):
রাজশাহী সহ সারাদেশের ১৫৭টি প্রকল্পের, ১০ হাজার ৪১টি অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, রাজশাহী ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের আওতাধীন ৩টি প্রকল্পের অধীন নির্মিত ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন এবং রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (আর.এম.ইউ) স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রাজশাহীর প্রান্তে সংযুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে যান আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ফলক উন্মোচন করেন ও বেলুন ফেস্টুন উড়ান রাসিক মেয়র ও সংশ্লিষ্টরা। এ সময় রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারমধ্যে রাজশাহীতে আমাদের বহুল কাঙ্খিত বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের উদ্বোধন করলেন। পুরো উত্তরাঞ্চলের নতুন প্রজন্ম যারা মহাকশা ও সৃষ্টির ব্যাপারে জানতে আগ্রহী, যারা বিশেষত শিক্ষার্থী, তারা এখান থেকে অনেক কিছু জানতে পারে, অনেক উপকৃত হবে। এছাড়া শহরের বাইরে জেলাও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা দলে দলে আসবেন ও জ্ঞান অর্জন করবেন।এ সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন, বিএমডিএ চেয়ারম্যান আখতার জাহান, বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান, মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) তৎকালীন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীতে নভোথিয়েটার স্থাপনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ডিও দেন। মূলত এরপর থেকেই শুরু নভোথিয়েটারের স্বপ্নযাত্রা। নভোথিয়েটার স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণের বরাদ্দ না থাকায় শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার ভেতরে নভোথিয়েটার স্থাপনের প্রস্তাব দেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সম্মতি দিলে ২০১৮ সালে ২৩২ কেটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার নির্মাণকাজ শুরু হয়। করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়। অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে বহুল আকাঙ্খিত বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের যাত্রা শুরু হলো।প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, রাজশাহীতে রয়েছে ১৫ মিটার ব্যাসের ১৬০ আসন বিশিষ্ট অত্যাধুনিক প্লানেটারিম, ডিজিটাল সায়েন্টিফিক এক্সিবিট, রোবট, সৌরজগতের তথ্যসহ গ্রহগুলির মডেল, ফাইভ-ডি সিম্যুলেশন থিয়েটার, ইমারসিভ রাইড সিম্যুলেটর, অবজারভেটরী টেলিস্কোপ, বঙ্গবন্ধু কর্ণার, শেখ রাসেল এক্সিবিটস গ্যালারী, দুইশ আসনের মাল্টিপারপাস হল, অত্যাধুনিক পার্ক ও ৮০ আসনের ক্যাফেটারিয়া, ৮৫টি গাড়ির পার্কিং, ২০০০ কেভিএ সাবস্টেশন, ৫০০ কেভিএ জেনারেটর, স্পিংকলার টাইপ অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা, কনফারেন্স হল, ৩টি ২০ অশ্বশক্তির সাবমার্সিবল পাম্প, ২শ টনের ৩টি চিল্ড ওয়াটার কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ২টি চলন্ত সিড়ি, ১২৫০ কেজি উত্তোলনের ক্ষমতাবিশিষ্ট ৩টি লিফট ও ৪টি সিড়ি। অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলির এই স্থাপনা রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১২ রাজশাহীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্মিত। এদিকে ভিডিও কনফারেন্সে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রাজশাহীর প্রান্তে রাজশাহীর সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুশীল সমাজ ও বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।