অনলাইন ডেস্ক:
নির্বাচনে কেউ তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে তা প্রতিরোধ করতে রাইফেল নিয়ে দাঁড়াতে হবে-এমন বক্তব্য দেওয়ায় অনুতপ্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এমন বক্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা কখনো কখনো ভুল করে ফেলি। এ জন্য আমি অনুতপ্ত।
আমাকে ক্ষমা করবেন।
আজ মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) নির্বাচন ভবনে ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপে বসে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি হয়তো অল্প শিক্ষিত। অল্প শিক্ষিত হলেও কেউ এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। ববি হাজ্জাজ সাহেবের কথার পিঠে আমি হেসে বলেছি- তলোয়ার দেখালে আপনি একটি বন্দুক নিয়ে দাঁড়াবেন। এটা হচ্ছে কথার পিঠে কথা। এটা কখনো একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মিন করতে পারে না। আর যদি এটা আমি মিন করতে পারতাম- প্রথম দিন থেকেই সবাইকে বলতাম, আপনারা অস্ত্র সংগ্রহ করবেন। আপনারা অস্ত্র সংগ্রহ করে নিজেদের শক্তিশালী করুন। আর এই কথাটি কখনো প্রথম দিন থেকে বলেছি বলে মনে পড়ে না।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু শক্তি থাকবে, সেগুলো আমরা নির্বাচনে প্রয়োগ করব। কিন্তু প্রতিটি কেন্দ্রে তো আমরা যেতে পারব না। কেন্দ্রে আপনাদের অবস্থান নিতে হবে। একান্তভাবে কামনা করব যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন, শক্তিশালী পার্টি থাকবে, দুর্বল পার্টি থাকবে। এখন শক্তিশালী পার্টির একজন, দুর্বল পার্টির তিনজন যদি থাকে তাহলে সম্ভাব্য যে সহিংসতা সেটা অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভব। আপনারা যেটা বারবার বলছেন অর্থশক্তি, পেশিশক্তি এসবের সঙ্গে অস্ত্রশক্তি; বিভ্রান্ত সৃষ্টি হয়েছে পরশুদিন যা বলেছি তা নিয়ে- সেটা হলো কেউ তলোয়ার নিয়ে এলে বন্দুক নিয়ে আসবেন। এখন আপনাকে বুঝতে হবে যে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কথাটা কখনো মিন করে বলতে পারেন না।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। যতগুলো আলোচনা করেছি, আমরা কোনো রাখঢাক করিনি। আমাদের কথা ও ছবি বাইরে স্ক্রিন দেওয়া আছে, সেখানে যায়। এখন আমাদের সাংবাদিকরা কেন এটা করলেন, বুঝে নাকি না বুঝে! আমার শ্রদ্ধা তাদের প্রতি এখনো আছে। কিন্তু এটা করে আমার মর্যাদাটা একেবারেই ক্ষুণ্ন করে দেওয়া হয়েছে।
নিজের কথা প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আপনারা বিষয়টি বিশ্বাস করছেন, আমার বাবা বেঁচে থাকলেও বিশ্বাস করতেন যে আমার ছেলে এমন বাজে পরামর্শ দিল কেন! আমার মা-ও বলতেন, বাবা এত খারাপ পরামর্শ দিলে কেন? আমি এ জন্য বলব, কখনো কখনো আমরা ভুল করে থাকি, এ জন্য আমি অনুতপ্ত। আমি হিউমার করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এটাকে যদি ওইভাবে প্রচার না করে বস্তুনিষ্ঠভাবে বলা হতো হিউমার করেছেন। আমি এটা মিন করিনি। এ জন্য আমাকে ক্ষমা করবেন।
তিনি বলেন, আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। আমরা সৎ, আমার সহকর্মীরা আছেন। সবাই কঠোর অবস্থানে আছেন। সবাই সৎ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা সর্বাত্মকভাবে সে চেষ্টা করব।
সংলাপে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এতে সিইসির সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন