ইতিকাফকারীর জন্য বিশেষ কিছু নির্দেশনা ইসলামে দেওয়া আছে। আছে কিছু করণীয় ও বর্জনীয় এবং বৈধ ও অবৈধ বিষয়। নিম্নে সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হলো—
ইতিকাফকারীর জন্য যেসব কাজ করা জায়েজ :
ইতিকাফকারীর জন্য মসজিদে পানাহার ও ঘুমানোর অনুমতি আছে। তবে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
ইতিকাফকারীর পরিবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবে, কথা বলতে পারবে।
ইতিকাফের স্থান থেকে ইসলামসম্মত প্রয়োজন বা স্বাভাবিক প্রয়োজন ছাড়া বের হয়ে গেলে তবে ইসলামসম্মত প্রয়োজন হলে মসজিদের বাইরে বের হওয়া যায়।
স্ত্রী সহবাস করলে, চাই বীর্যপাত হোক বা না হোক। ইচ্ছাকৃত হোক বা ভুলক্রমে হোক।
এ ছাড়া পাগল হয়ে গেলে, নারীদের হায়েজ-নেফাস হলে এবং কেউ ধর্মত্যাগী (মুরতাদ) হলে ইতিকাফ ভেঙে যায়।
মসজিদ থেকে বের হওয়ার বিধান :
১. ইতিকাফকারী যদি বিনা প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হয় তাহলে তার ইতিকাফ ভেঙে যাবে।
২. আর ইতিকাফের স্থান থেকে যদি মানবীয় প্রয়োজন মিটানোর জন্য বের হয় তাহলে ইতিকাফ ভঙ্গ হবে না।
৩. মসজিদে থেকে পবিত্রতা অর্জন সম্ভব না হলে মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি আছে।
৪. বাহক না থাকার কারণে ইতিকাফকারীকে যদি পানাহারের প্রয়োাজনে বাইরে যেতে হয় অথবা মসজিদে খাবার গ্রহণ করতে লজ্জা বোধ হয়, তাহলে এরূপ প্রয়োাজনে বাইরে যাওয়ার অনুমতি আছে।
৫. যে মসজিদে ইতিকাফে বসেছে সেখানে জুমার নামাজের ব্যবস্থা না থাকলে জুমার নামাজ আদায়ের প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হওয়া ওয়াজিব এবং আগেভাগেই রওনা হওয়া তার জন্য মুস্তাহাব।
৬. ইসলামসমর্থিত ওজরের কারণে ইতিকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারে।
৭. কোনো নেকির কাজ করার জন্য ইতিকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়। যেমন রোগী দেখতে যাওয়া, জানাজায় উপস্থিত হওয়া ইত্যাদি। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘ইতিকাফকারীর জন্য সুন্নত হলো, রোগী দেখতে না যাওয়া, জানাজায় অংশ গ্রহণ না করা, স্ত্রী স্পর্শ না করা এবং সহবাস না করা এবং খুব বেশি প্রয়োজন না হলে মসজিদ থেকে বের না হওয়া।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪৭৩)
৮. ইতিকাফ-বিরুদ্ধ কোনো কাজের জন্য ইতিকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়। যেমন ক্রয়-বিক্রয়, স্বামী-স্ত্রীর মিলন ইত্যাদি।
ইতিকাফকারীর জন্য যা যা মাকরুহ :
ইতিকাফ অবস্থায় চুপ থাকলে সওয়াব হয়, এই মনে করে চুপ থাকা মাকরুহে তাহরিমি। বিনা প্রয়োজনে পার্থিব কোনো কাজে লিপ্ত হওয়া মাকরুহে তাহরিমি। যেমন কেনাবেচা করা ইত্যাদি। তবে একান্ত প্রয়োজনবশত, যেমন: ঘরে খাবার নেই এবং সে ছাড়া অন্য কোনো বিশ্বস্ত মানুষও নেই—এরূপ অবস্থায় মসজিদে মালপত্র উপস্থিত না করে কেনাবেচার চুক্তি করতে পারে।