Friday , 22 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ

যুক্তরাষ্ট্র খুনিদের আশ্রয় দেয়, আবার গণতন্ত্রের কথা বলে

অনলাইন ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমেরিকার মতো দেশ সব সময় ন্যায়বিচারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটাধিকারের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে, কিন্তু আমাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের, পঁচাত্তরের খুনিদের তারা আশ্রয় দিয়ে বসে আছে।’ তিনি বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে আমাদের আইনের শাসনের সবকও শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথাও শুনতে হয়, ন্যায়বিচারের কথাও শুনতে হয়—সেটিই আমার কাছে অবাক লাগে।’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড জুডিশিয়ারি’ শীর্ষক বাংলা ও ইংরেজিতে মুজিব স্মারক গ্রন্থ এবং ‘ন্যায়কণ্ঠ’ শীর্ষক মুজিববর্ষের স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের মূল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের সাহয্যে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

শেখ হাসিনা এ সময় সবার প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ন্যায়বিচার মানুষের প্রাপ্য। সেটা যেন সব সময় পায় তা আমরা চাই। কারণ আমরা ভুক্তভোগী। তাই আমরা জানি বিচার না পাওয়ার কষ্টটা কী।’

শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের বিয়োগান্ত অধ্যায় তুলে ধরে দীর্ঘদিন বিচার না পাওয়ার জন্য আক্ষেপ প্রকাশ করেন জাতির পিতার কন্যা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যারা ১৫ই আগস্টে সব হারিয়েছিলাম, আমার মতো মা-বাবা হারিয়ে যেন কাউকে বিচারের জন্য চোখের পানি ফেলতে না হয়। সেটাই আমরা চাই। সেটা আপনারা নিশ্চিত করে দেবেন। আর আমি যতক্ষণ সরকারে আছি, এর জন্য যা যা দরকার আমরা করব।’

১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান জাতির পিতার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে বহু বছর বিচার না পেয়ে মনে অনেক দুঃখ ছিল। যা হোক, এই হত্যার বিচার পেয়েছি। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার রায় কার্যকর হওয়ায় বিচার বিভাগ, দল ও দেশবাসীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, তবে এখন আরেকটা দায়িত্ব রয়ে গেছে। চক্রান্তটা খুঁজে বের করা। এটা একদিন বের হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।

সরকারে আসার পর যুক্তরাষ্ট্রে যে কজন রাষ্ট্রপ্রধান ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে খুনিদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কথা বলেছেন, অনুরোধ করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আপনারা কিভাবে আশ্রয় দেন? আপনাদের জুডিশিয়ারি কিভাবে একজন খুনিকে আশ্রয় দেয়?’ আমেরিকায় খুনি রাশেদ এবং কানাডায় মেজয় নূর আশ্রয় নিয়ে আছেন বলেও তিনি জানান।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অ্যাপিলেট ডিভিশনের বিচারপতি এবং স্মারকগ্রন্থ ও স্মরণিকার সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন ।

মুজিব স্মারক গ্রন্থ ও স্মরণিকার ওপর অনুষ্ঠানে ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রচারিত হয়।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের সব শহীদ এবং বিজয়ের এই মাসে সব মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

সূত্র : বাসস

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply