Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
যশোর-৫ আসনে এবার প্রার্থী বেছে নিতে জনগণ ভুল করবে না -নিতাই কুমার বৈরাগী
--প্রেরিত ছবি

যশোর-৫ আসনে এবার প্রার্থী বেছে নিতে জনগণ ভুল করবে না -নিতাই কুমার বৈরাগী

মণিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি:

যশোর-৫ সংসদীয় আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই। যশোর -৫ সংসদীয় আসন মণিরামপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। বর্তমানে এই আসনের এমপি স্বপণ ভট্টাচার্য।  যশোর-৫ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে হতে পারে নৌকার কান্ডারী? একথা জানতে চাইলে, নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী নিতাই কুমার বৈরাগী  গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হন কলস প্রতীক নিয়ে স্বপন ভট্টাচার্য চাঁদ। বর্তমানে তিনি স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

যশোরের এই আসনে সংখ্যালঘু ভোটার সবচেয়ে বেশি। আওয়ামী লীগের ভোটের একটি  খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভোট ব্যাংক।

স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন দপ্তরের চাকরির  বিভিন্ন পদ পদবীতে  নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে যেমন প্রয়াত নেতা সাবেক এমপি খান টিপু  সুলতান কে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়েছিল বর্তমানেও এই নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছেন যারা ক্ষমতায় আছেন তারা। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দুর্নীতির বিষয়গুলো নিয়ে বারবার রিপোর্ট হয়েছে ধারাবাহিকভাবে। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানান , রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান যশোর-৫ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতা ও নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের জল্পনা কল্পনা করে নৌকাকে জেতাবার উদ্দেশ্যে বারবার যে নামটি সম্মুখে চলে আসে সেই নিতাই কুমার বৈরাগী বলেন, পার্লামেন্টের সদস্যদের সর্বাধিক ক্ষমতা থাকে অন্যান্য দেশের থেকে আমাদের বাংলাদেশে অনেক বেশি। এমপি স্বপন  ভট্টাচার্য চাঁদ চাইলেই দ্রুতই ভবদহ জলাবদ্ধ  সমস্যাটি  নিষ্পত্তি করতে পারতেন কিন্তু করেননি। তিনি আরও জানান সাবেক এমপি এডভোকেট খান টিপু সুলতান একটা কথা বারবার বলতেন যে, আমার মনিরামপুর দিয়ে একটা পাখি উড়ে গেলে আমার অগোচরে যাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে আপনারাই বুঝুন, সচেতন হোন প্রার্থী  নির্বাচনে ? ঈশ্বর যদি আমাকে কখনো এমপি বানায় তাহলে দুর্নীতি থাকবে না, আর কোন নিয়োগ বাণিজ্য ও থাকবে না। আবেগাপ্লুত হয়ে  নিতাই কুমার বৈরাগী আরও জানান সুন্দর এবং সমৃদ্ধশীল একটি রাষ্ট্র গঠনে মনিরামপুর উপজেলা অগ্রণী ভূমিকা রাখবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার সংগ্রামে। এবার ভোট হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠভাবে। কারচুপির কোন অবকাশ থাকবে না। ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতিও থাকবে চোখে পড়ার মতো।

আগামী দ্বাদশ জাতীয়  সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৮৯ যশোর-৫ মণিরামপুর আসনে আওয়ামী লীগের অন্তত ১১ জন নেতাকর্মীর নাম আলোচনায় রয়েছে। তারা হলেন- স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য  চাঁদ  এমপি, নিতাই কুমার বৈরাগী, মণিরামপুরের  উপজেলা চেয়ারম্যান  নাজমা খানম, সাবেক পৌর মেয়ার আমজাদ হোসেন লাভলু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এসএম ইয়াকুব আলী, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান বারী, অ্যাডভোকেট খান টিপু সুলতানের স্ত্রী ডাক্তার জেসমিন আরা ও পুত্র কেন্দ্রীয় যুবলীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হুমায়ুন সুলতান, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী। এ ছাড়া বর্তমান এমপি স্বপন ভট্টাচার্যের সহোদর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভাট্টাচার্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের নামও রয়েছে আলোচনায়। আলোচনায় ১১ জন  থাকলেও মাঠে রয়েছেন ৬ জন তারা হলেন,স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি,  সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিতাই কুমার বৈরাগী, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম,
মণিরামপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু,আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এসএম ইয়াকুব আলী,কেন্দ্রীয় যুবলীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হুমায়ুন সুলতান সাদাব।

বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন- মণিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মুছা, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার সেলিম অগ্নি। তারা তিনজনই মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও জামায়াতের গাজী এনামুল হক, জাতীয় পার্টির যশোর জেলার সভাপতি শরিফুল ইসলাম সরু চৌধুরী ও মণিরামপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এমএ হালিমের নামও ঘুরছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায়।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায় , বরাবরই মণিরামপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও এখানে দলের মধ্যে বিভাজন রয়েছে। বর্তমান এমপি স্বপন ভট্টাচার্য  চাঁদ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়েও নির্বাচন করেছেন অতীতে। পরবর্তীতে  দলের মনোনয়নে নির্বাচিত হলেও নেতাকর্মীদের উল্লেখযোগ্য অংশ তার সঙ্গে নেই বলেও দাবি অনেকের। এ ছাড়া এলাকার বিভিন্ন পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে ভবদাহ কেলেঙ্কারি,আপন ভাগ্নে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান’র চাউল চুরি,   দখলদারিত্ব, নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়মসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতন বিএনপি নেতাদের সাথে আঁতাত। এছাড়া  ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ব্যাপারে এমপির অবস্থান নিয়েও রয়েছে সমালোচনা। বর্তমান এমপির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগের ভোটার হ্রাস পেয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়,মনিরামপুরে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী বিএনপি। বিএনপি’র ওয়ার্ড পর্যায়ে সকল কমিটি গঠন করা শেষ হয়েছে। আগের থেকে মণিরামপুরে বিএনপির ভোটার  বেড়েছে।
মণিরামপুরে সাংগঠনিকভাবে এগিয়ে বিএনপি, পিছিয়ে আওয়ামী লীগ। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করলে ৮৯ যশোর-৫ মণিরামপুরের আসনটি হারাতে হবে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply