স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ ১৮ মাস পর যশোরের ৩ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর প্রাণের উচ্ছ্বাসে প্রানবন্ত ২ হাজার ২২৮টি ক্যাম্পাস।
করোনা মহামারির সংকট পিছনে ফেলে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে শিশুদের আনন্দের ফুল স্বপ্নের স্কুলগুলো । দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের। উপহার দেয়া হয়েছে চকলেটও। ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দীর্ঘদিন পর নতুন সাজে সেজেছে ক্যাম্পাস। এসব দেখে বিমোহিত শিক্ষার্থীরা। আর দীর্ঘদিন পর আবারও পাঠদান করতে পেরে খুশি শিক্ষকরাও।
সূত্র জানায়, যশোরের আট উপজেলায় স্কুল-কলেজ- মাদ্রাসা রয়েছে ২ হাজার ২২৮টি। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষাধিক। দীর্ঘদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় উপস্থিত হয়েছে এসব শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিতে সরকার যে ১৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, তা শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা শিক্ষা অফিস। দীর্ঘদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির দিনটা স্মরণীয় করতে শিক্ষার্থীদের স্কুলে বরণ করেছেন শিক্ষক- কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
যশোরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানেেই উৎসবের আমেজ বইছে। আবেগে আফ্লুত হয়ে অনেকে ভুলে গেছে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথাও। স্কুলের গেটে ফুল নিয়ে শিক্ষার্থীদের বরন করতে দাড়িয়ে আছে শিক্ষকরা। এ যেন এক অন্য আবেশ। ছোট বাচ্চাদের জন্য ছিলো চকলেটও। একই সাথে স্কুলে ঢোকার সাথে সাথে তাপমাত্রাও মেপে নিচ্ছেন শিক্ষকরা।
যশোর মোমিন গার্লস স্কুলের শিক্ষার্থী আফিফা বলেন, আমি বাবার মটরসাইকেল থেকে নেমেই দেখি স্কুলের গেটে আমার শিক্ষকরা ফুল ও চকলেট দিয়ে স্বাগত জানানোর জন্য দাড়িয়ে আছেন। আফিফা বলেন, আমি তখনও বুঝতে পারিনি এই সারপ্রাইজ আমার জন্য। ফুল আর চকলেট পেয়ে আমি ভীষন খুশি, স্কুলে সাজ সাজ রব। স্কুলে আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। আশা করি আমরা সবাই অগের মতো স্কুলে হৈ চৈ করে বেড়াতে পারবো। আবার বন্ধুদের সাথে দেখা হচ্ছে। ক্লাস শিক্ষকদের সাথে দেখা হয়েছে। সরাসরি দীর্ঘদিন পর ক্লাস করে খুব ভালো লাগছে।
জিলা স্কুলের ছাত্র ফাহিম হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পর স্কুলে এসে খুব খুশি। এমনিতেই আমাদের জিলা স্কুলের পরিবেশ খুব সুন্দর। তার পরে দীর্ঘদিন পর স্কুলে এসে দেখি, পুরো ক্যাম্পাস সাজ সাজ রব। স্কুলের প্রধান ফটকে আলোকসজ্জ্বা করা; সাথে আমাদের বরণ করার জন্য ফুল-চকলেট দিয়েছে।
যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা লায়লা শিরিন সুলতানা আমাদের প্রতিবেদক জেমস আব্দুর রহিম রানাকে জানান, স্কুলের ভেতরের জঙ্গল কেটে এবং স্কুল ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরাও স্কুলে আসার পরে ক্যাম্পাস মুখর হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলমুখী হওয়ায় তাদের জন্য আমরা অর্ভ্যথনা জানিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
যশোর জিলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন বলেন, স্কুল খোলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাজসাজ রব পড়েছে। আগের মতো স্কুলে শিক্ষার্থীদের হৈ চৈ মেতে উঠেছে। দৃশ্যটি দেখে ভালো লাগছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফিরে পেয়েছে তার প্রাণ।
যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, দীর্ঘদিন পরে স্কুল কলেজ খুলেছে। সরকারের যে নির্দেশনা রয়েছে, সেটা মেনেই যশোরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ একেবারেই কম বিধায় কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করা হচ্ছে ।