ময়মনসিংহ প্রতিনিধি;
করোনা ভাইরাস মহামারীতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আওতাধিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্র- ছাত্রীদের অনুদান প্রদানের বিঙ্গপ্তিতে টাকার পরিমান উল্লেখ নেই । আবেদনের সময় ছিলো ২৮ ফেব্রুয়ারী ইতিমধ্যে সময়ও পার হয়ে গেছে। নিতিমালা ও শর্ত অনুসারে সবাই আবেদনের যোগ্যও না। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়েছে সবাইকে অনুদান দেওয়া হবে দশহাজার টাকা করে । সেই গুজবের রেশ ধরে গত দুইদিন শনিবার ও রবিবার জেলাসদর সহ বিভিন্ন উপজেলা স্কুল-কলেজগুলোতে অনুদানের টাকা পেতে প্রত্যয়নপত্র নিতে হিড়িক পড়েছে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সবাইকে স্বাস্থ্য ঝুকিতে ফেলেছে বলে সুধিমহল মনে করছেন। সূত্রে জানা যায়, মাউশির বাজেট শাখা থেকে ১৮ জানুয়ারী স্বারক নং ৩৭.০০.০০০০.৬৪.২০.০০৫.১৭-১৮, তারিখ: ১৮/০২/২০২১ মূলে বাংলাদেশ সচিবালয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে দেখা যায় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদানের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
বিজ্ঞাপ্তিতে কত টাকা দেওয়া হবে তা উল্লেখ নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাউশির ওয়েব সাইটে
আবেদন ফরম অপশনে ক্লিক করে আবেদন করতে বলা হয়েছে। ঐ বিঞ্জপ্তিতে সবার জন্য সরকারি অনুদান দেওয়ার কথা বলা নেই। বলা আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র ক্রয়সহ অন্যান্য কাজের জন্য, শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের দূরারোগ্য ব্যাধি ও দৈব দুর্ঘটনা এবং শিক্ষাগ্রহণ কাজে ব্যয়ের জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে এ বিশেষ মঞ্জুরি প্রদানের ক্ষেত্রে দুঃস্থ, প্রতিবন্ধী, অসহায়, রোগগ্রস্ত, গরীব, মেধাবী, অনগ্রসর সম্প্রদায় ছাত্র-ছাত্রীদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। এবং আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেয়ায় শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের মাঝে টাকা পাওয়ার আশায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যয়ন নেওয়ার হিড়িক পড়ে গেছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে টাকার বিনিময়ে প্রত্যয়নপত্র দেওয়ারও অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল, ঈশ্বরগঞ্জ, গৌরীপুর, ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট, ফুলপুর, তারাকান্দা, ফুলবাড়ীয়া, মুক্তাগাছা ও সদর উপজেলাসহ প্রতিটি উপজেলা সদরে কম্পিউটার দোকান গুলোতে ইন্টারনেটে আবেদন করার উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছে।
মুক্তাগাছা উপজেলা শহরের এনএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির সোহাগী আক্তার বলেন, করোনকালীন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়া হবে, এ খবরে তারা প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে ইন্টারনেটের দোকানে এসেছিল আবেদন করতে।
শিক্ষার্থীদের ভিড়ের বিষয়টি স্বীকার করে বড়হিস্যা বাজার এলাকার এসএস ফটোস্টেট দোকানের ফরহাদ হোসেন বলেন, শিক্ষাথীদের বারবার বোঝানোর পরও তারা দোকানে ভিড় করছে। তবে কিছু দোকানদার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে এ কথা সত্য।
অভিযোগ অস্বীকার করে মানকোন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যয়নপত্র প্রদানের নামে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। তবে ফটোস্ট্যাট বাবদ ২০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মুক্তাগাছা ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মনসুর বলেন, সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভুয়া তথ্যে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরণের টাকা দেওয়ার কোন নোটিশ তারা পাননি।