নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
বাহরাইন থেকে দেশে বেড়াতে এসে মর্মান্তিক ভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেলেন এমরান হোসেন (৩২)। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন তার স্ত্রী মিম (২২)। নিহত এমরান হোসেনের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ২ নং পেরিয়া ইউনিয়ন এলাকাধীন উত্তর শাকতলী গ্রামে। তিনি মুন্সিবাড়ির মোহাম্মদ আবুল কাশেমের ছেলে।
জানা গেছে, ২ এপ্রিল শুক্রবার বিকেল ৫ টা ২০ মিনিটের সময় নরপাটি তার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার পথে জোড় খেজুর গাছ তলায় স্ত্রীসহ মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় পতিত হয়। তারা মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার পর মুহূর্তের মধ্যে পিছন থেকে আরেকটি দ্রুতগামী মোটরসাইকেল এসে তাদেরকে ধাক্কা দেয়। এতে তারা গুরুতর আহত হন। স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে বেশি আহত হন এমরান হোসেন।স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দুজনকে (স্বামী-স্ত্রীকে) প্রথমে লাকসাম জেনারেল হসপিটালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, কুমিল্লা সার্জিকেয়ার হাসপিটাল এবং কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যান।
রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সকলেই হাসপাতালে ভর্তি না নিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। ঢাকার হাসপাতালগুলোতে রোগী ভরপুর, ভর্তি করানোর মতো ঠাঁই নাই এমন সংবাদের কারণেই তারা চেয়ে ছিলেন ঢাকায় না নিয়ে কুমিল্লাতেই চিকিৎসা করাবেন। কুমিল্লায় ভর্তি করাতে না পেরে, অবস্থার অবনতি হওয়ায় এবং কোনো উপায়ান্তর না দেখে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে রাত ১ টা ৪৫ মিনিটের সময় চান্দিনায় পৌঁছালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শনিবার দুপুর ২ টায় এমরান হোসেনের জানাজা তার নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে।
নিহত এমরানের চাচাত ভাই মোহাম্মদ রাসেল জানান, দুই বছর হয়েছে তিনি পার্শ্ববর্তী লাকসাম উপজেলার নরপাটি গ্রামে বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রীর নাম মিম আক্তার। বিয়ের পর এবারই তিনি প্রথমবার বাড়ি এসেছেন। তাদের কোন সন্তানাদি নেই। ২৫ দিন হয়েছে তিনি বাহারাইন থেকে দেশে এসেছেন। মাত্র ১০ দিন হয়েছে তিনি মোটরসাইকেল চালানো শিখেছেন। চালক হিসেবে তিনি ছিলেন নতুন। ফলে গাড়িটি নিয়ন্ত্রনহীন হলে তিনি আর নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি হয়তো। আবুল কাশেমের তিন ছেলে, চার মেয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ৫ নাম্বার। এমরানের মর্মান্তিক এই মৃত্যুতে তাঁর বাড়ি, গ্রাম এবং এলাকায় শোকের মাতম চলছে।