মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনোভাবেই না জড়াতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা এবং জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, কোনোভাবেই আমরা যেন মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িয়ে না পড়ি। কারণ এর সঙ্গে আমাদের দেশের অখণ্ডতা জড়িত আছে।’
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে বিরোধীদলীয় উপনেতা এসব কথা বলেন।
ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘কিছুদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল এখানে এসেছে। তারা এসেছে অ্যাপারেন্টলি ফর ডেমোক্রেসি, ফর ইলেকশন। আমি মনে করি না যে সেটা সত্য। তারা এসেছে তাদের ভূ-রাজনীতির কারণে।
তারা চায় বাংলাদেশকে কোনো একটি প্ল্যাটফরমে অন্তর্ভুক্ত করতে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম কমানোর জন্য শুল্ক কমানো হয়েছে। কিন্তু জিনিসের দাম কমেনি।
কেন দাম বাড়ছে? কেন আমরা সিন্ডিকেটকে কন্ট্রোল করতে পারছি না? সিন্ডিকেট কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? কোনো সমস্যা হলে বলা হয়, করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধ। এসব বলে লাভ নেই। নিজেদের কাঠামোগত সমস্যা বের করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রতিটি দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। বাংলাদেশ কেন পারছে না?’
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি এমন হয়েছে যে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে।
বর্তমান সরকার শক্তিশালী দাবি করে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ‘সংসদে ১৩ জন ছাড়া সবাই সরকারি দলের। তাহলে কেন সরকার চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারবে না? রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিম্নমুখী হবে বলে আশা করা গেলেও তা হচ্ছে না। প্রতিবছর অর্থ পাচার হয়। কেন, কারা, কিভাবে পাচার করছে এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হবে। বিষয় যতই খারাপ হোক, সংসদেই আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করার দাবি জানিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, ‘তাদের নিজস্ব লোকবল থাকতে হবে। ডিসিদের রিটার্নিং অফিসার করা হয়। এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য না। তাঁরা সরকারের অংশ। তাঁরা ফিট নন, এটাই বাস্তবতা। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, কারণ তারা সংবিধানে বিশ্বাস করে। জাতীয় পার্টি জানত যে নির্বাচনে হয়তো ভালো ফল করতে পারবে না, তার পরও তারা গিয়েছিল, যাতে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে।’
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘উন্নয়ন টেকসই করতে হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার বিভাগের ওপর আস্থা বাড়াতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেন ক্ষুণ্ন না হয়, তা দেখতে হবে।’