অনলাইন ডেস্ক:
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের হাতের লেখা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আদেশের পর আদালতের খাস কামরায় নিয়ে বাবুল আক্তারের হাতের নমুনা লেখা নেওয়া হয়। পরে এই লেখা পাঠানো হবে পরীক্ষাগারে।
আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতে শুনানির পর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মুহাম্মদ আবদুল হালিম এই আদেশ দিয়েছেন।
বাবুল আক্তারের নমুনা লেখা সংগ্রহের তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, একটি বইয়ে গায়ত্রী অমর সিং নামের এক নারীর বিষয়ে কিছু তথ্য লেখা আছে। ওই লেখা বাবুল আক্তারের বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই কারণে তদন্তের স্বার্থে বাবুল আক্তারের হাতের লেখা পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শুনানির পর হাতের লেখা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন। এরপর নমুনা লেখা সংগ্রহ করা হয়।
২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসির মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এরপর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলার তদন্ত পর্যায়ে পিবিআই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাদি বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার তথ্য পায়। এই কারণে বাবুলের মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে নতুন করে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় গত বছরের ১২ মে বাবুলকে স্ত্রী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু পরবর্তীতে আদালত বাবুলের দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। এরপর পিবিআই মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে দুই মামলায় প্রাপ্ত তথ্য একত্রীকরণের আবেদন জানায়। শেষে আদালত দুই মামলার নথিপত্র একত্রীকরণের আদেশ দেয়। তদন্ত পর্যায়ে পিবিআই একটি বইয়ে ভারতীয় নাগরিক গায়ত্রী অমর সিং নামের এক নারীর বিষয়ে কিছু লেখা পায়। সেই লেখার সূত্র ধরে বলা হচ্ছে, বাবুল আক্তার ওই নারীর সঙ্গে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়েছিলেন। এখন হাতের লেখা পরীক্ষার অনুমতি পেলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
ফেনী কারাগারে যেতে বাবুলের আবেদন
এদিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিবন্দী বাবুল আক্তার নিরাপদবোধ করছেন না উল্লেখ করে তাঁকে ফেনী কারাগারে পাঠানোর জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামে কর্মরত থাকার সময় তিনি দুর্ধর্ষ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করেছিলেন। তাঁদের অনেকেই এখন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছে। ফলে বাবুল আক্তার এই কারাগারে নিরাপদবোধ করছেন না। তাকে যেন আগের মতো ফেনী কারাগারে রাখা হয় সেই বিষয়ে আদালতের আদেশ চাওয়া হয়েছে।