অনলাইন ডেস্ক:
দেশে আর একজন লোকও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতার মানেই হচ্ছে জনগণের সেবা করা। বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন, ভূমিহীন এবং ঠিকানাবিহীন থাকবে না। আমরা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।
আজ মঙ্গলবার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় ধাপে সারা দেশে ৪৯২টি উপজেলার ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি বিতরণকালে সুবিধাভোগীদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, সরকার একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে জাতির পিতার লালিত স্বপ্ন পূরণে সবার মুখে হাসি ফোটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৩২ হাজার ৯০৪টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মাঝে জমি ও ঘর দিয়েছি। আমি আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের উপহার হিসেবে আজ এ সব জমি ও ঘর দিয়েছি। যারা ঘর পেয়েছে তাদের মুখের হাসি আমি খুব পছন্দ করি।
সরকার প্রধান বলেন, বেদে, তৃতীয় লিঙ্গ, চা-শ্রমিক, কুষ্ঠ রোগী, ভিন্নভাবে সক্ষমসহ সুবিধাবঞ্চিত সকল শ্রেণির মানুষকে সুন্দর জীবন উপহার দিতে গৃহায়ণ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। আর এ জন্য সরকার শুধু খাস জমিরই খোঁজ করছে না, নিজেদের অর্থায়নে জমি কিনেও ঘর-বাড়ি করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি জানি না পৃথিবীর আর কোনো দেশে এ ধরনের উদ্যোগ আর কেউ নিয়েছে কিনা। কিন্তু আমরা জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক। আমি শুধু তাঁর কন্যাই না, তাঁর আদর্শেরও অনুসারী। আর আমার কাছে ক্ষমতাটা হচ্ছে জনগণের সেবা করা। তাঁদের জন্য কাজ করা এবং আমি সেটাই করে যাচ্ছি। আমি জানি আজ আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে, যখন তিনি দেখবেন তাঁর জনগণের মুখে হাসি ফুটেছে।
শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না, সেটাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য। জাতির পিতার গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের পদাংক অনুসরণে ’৯৭ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর পরই এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। ৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়-ক্ষতি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া টের পান নি। কারণ তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। অন্যদিকে ’৯৭ সালের ঘূর্ণিঝড়ের প্রেক্ষাপটে তিনি তাঁর বিদেশ সফর বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে মানুষকে সহযোগিতায় নেমে পড়েন এবং নিজে বিভিন্ন জায়গায় যান।
সরকার প্রধান বলেন, আমার সবচেয়ে ভালো লাগে যখন দেখি একটা মানুষ ঘর পাওয়ার পর তার মুখের হাসি। জাতির পিতা দুঃখী মানুষের মুখেই হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। সকল মানুষ যাতে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে সে লক্ষ্য নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাই আমরা চালিয়ে যাব। জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনকালে আমরা উন্নয়নশীল দেশের যে স্বীকৃতি পেয়েছি তাকে ধরে রেখে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও চিত্র ও প্রদর্শিত হয়।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন