কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর গ্রামে পর্যটন জোনের নামে ১৬ভিলেজার পরিবারের প্রায় ৬০ বছরের ভোগদখলীয় শত কোটি টাকা মূল্যের বনজ সম্পদসহ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় মানিকপুর-সুরাজপুর ইউনিয়নের সুরাজপুর গ্রামের ভিলেজপাড়ায় আয়োজন করে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি। এতে অংশ নেন শত শত গ্রামবাসী। এ সময় তাদের পাশে দাড়ান স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রুস্তম শাহরিয়ার। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অসহায় মানুষের সহায়-সম্পদ কেড়ে নিয়ে এ কেমন পর্যটন জোন করতে চায় প্রশাসন, পর্যটন জোন করতে হলে এলাকায় সরকারি ও বনবিভাগের অনেক জমি-জমা রয়েছে, এসব জমিতে করা যায়, কিন্তু তা না করে স্থানীয় কতিপয় ভূমিদস্যূচক্রের সাথে হাত মিলিয়ে দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে যারা এসব জায়গা আবাদ করে আসছেন তাদের জায়াগা কেড়ে হচ্ছে। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পর্যটন জোন নয়, বরং পর্যটন জোনের নামে অসহায় লোকদের জমি জবরদখলপূর্বক লুটে নিতে পায়তারা করছে একটি মহল, কোনভাবে এসব জায়গায় পর্যটন জোন করতে দেবেনা বলে হুশিঁয়ারি উচ্চারণ করেন বক্তারা। এদিকে মানববন্ধনে এসে যোগ দেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগনেতা রুস্ত শাহরিয়ার। বক্তব্যে তিনি বলেন, নিরীহ লোকজনের ভূমি কেড়ে নিয়ে কাউকে এখানে পর্যটন জোন করতে দেওয়া হবে না, প্রশাসন জোন করতে চাইলে এলাকায় আরও জমি আছে, সেখানে গিয়ে করুক, তিনি বলেন, আমরা পর্যটন জোনের বিরুদ্ধে নয়, বরং পর্যটন জোনের নামে যারা অসহায় লোকদের জমি লুটে নিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে। তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, সৎ ইচ্ছে থাকলে অসহায় লোকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে পর্যটন জোন করুন, অন্যথায় নয়। যদি তারা করা না হয়, তাহলে এলাকার জনগণকে নিয়ে প্রতিহত করার ঘোষনাও দেন রুস্তম শাহরিয়ার। এসময় ভূমি মালিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখে, ভিলিজার পাড়ার বাসিন্দা আবুল বশর, আলী আকবর, মৌ: মুস্তাফিজুর রহমান,কুইল্লা বিবি, মো: আজিমউল্লাহ, শামসুল আলম, জোবাইদুল হক, সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, মো: রুবেল, রফিকুল ইসলাম, দফাদার মোক্তার আহমদ ও মৌ: আয়ুব। মানববন্ধন করে প্রতিবাদ সভা করার পর ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও কতিপয় ভূমিদস্যূর অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে বললে চলে।
উল্লেখ্য; ১৯৬১ সাল থেকে ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন মানিকপুর-সুরাজপুর বনবিটের এলাকায় বসতঘর নির্মাণপূর্বক বসবাস করে আসছেন ১৬টি পরিবার। তাদের অনেকই বর্তমানে বেচে নেই। এ অবস্থায় তাদের উত্তরসুরীরা রকমারি গাছপালা সৃজনপূর্বক বিভিন্ন কৃষি-খামার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এসব লোকদের নামে দখলে রয়েছে অর্ধশত একর জমি।
ওই জমিতে শতবর্ষী গাছ-গাছালি রয়েছে, পাশপাশি খালি জায়গায় তারা রকমারি কৃষি খামার করেন প্রতিবছর। কিন্তু ইতোমধ্যে প্রশাসনকে একটি মহল জায়গাগুলোকে সরকারের ১নং খাস খতিয়ানের জমি বলে ভুল-বাল ব্যাখ্যা দিয়ে ওই জায়গায় পর্যটন জোন হিসেবে চিহ্নিত করলে এ উদ্বুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।