মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে ইউপি নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় কাওসার দর্জি (২৫) নামের এক যুবক নিহত মামলায় হাজিরা দিতে এসে বাদী ও আসামীপক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন। বুধবার দুপুরে মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
জানা যায়, গত ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ড থেকে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ইকবাল দর্জি বিজয়ী হন। একই পদে আব্দুল আলিম দর্জি পরাজিত হলে নির্বাচনের পর থেকে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এরই জেরে গত ৫ই মার্চ রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার ঝিকরহাটি এলাকায় পরাজিত মেম্বার প্রার্থী আব্দুল আলিম দর্জি তার লোকজন নিয়ে বিজয়ী ইকবাল দর্জির সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একাধিক বসতঘর ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষে আহত হয় অন্তত ৮ জন। তাদেরকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ইদ্রিস দর্জির ছেলে কাওসার দর্জি (২৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এই ঘটনায় ওইদিনই নিহত কাওসারের চাচা মোস্তফা দর্জি বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ৩৭ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় উচ্চ আদালতের জামিন শেষ হওয়ায় বুধবার (২৭ এপ্রিল) মাদারীপুর আদালতে হাজির হন ১৮ আসামী। শুনানী শেষে মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমাইল হোসেন হাজির হওয়া ১৮ আসামীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে বাদীপক্ষ ও আসামীপক্ষের লোকজনের সাথে কথার কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আদালত প্রাঙ্গনে সংঘর্ষ জড়ায় তারা। এতে উভয়পক্ষের আহত হয় অন্তত ৫জন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রনে আনে। এদিকে আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আল শাহরিয়ার শাকিল জানান, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে, সবাই শঙ্কামুক্ত।
মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) রমেশ চন্দ্র দাস জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। মূলত আসামীদের জামিন না মঞ্জুর করায় শুরু হয় হট্টগোল। পরে বাদীপক্ষ ও আসামীপক্ষ এই সংঘর্ষে জড়ায়।