Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
মহেশখালীতে পাহাড় ও প্যারাবন নিধনের দায় নিতে চাচ্ছেনা কেউ
--প্রেরিত ছবি

মহেশখালীতে পাহাড় ও প্যারাবন নিধনের দায় নিতে চাচ্ছেনা কেউ

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
প্যারাবন কেটে নিধন করে যাচ্ছে দ্বীপ উপজেলা মহশখালীর। যে যে দিক থেকে সুবিধা পাচ্ছে নিধন করে যাচ্ছে। যখন যে সরকার আসে তাদের প্রভাবশালী নেতাদের অনেকেই হয়ে যায় বন পাহাড়  খেকো। সরকার পরিবর্তন হলে সুবিধা চালু রাখার জন্য মহেশখালীর প্রতিটি প্রভাবশালী  পরিবারে রয়েছে বড় দুই দলের নেতা। ভাই -বেরাদার মিলেমিশে ধরে রেখেছে পাহাড় ও প্যারাবন দখলের রীতি। বর্তমানে তার পরিধি বড় হয়ে সরকারি আমলারা ও বিভিন্ন বড় বড় ঠিকাদাররাও যোগ দিয়েছে এই কাজে। স্থানীয় ও বহিরাগত প্রভাবশালীরা প্যারাবন কেটে তৈরী করেছে লবণ মাঠ ও চিংড়ি ঘের। স্থানীয় অন্য  কিছু প্রভাবশালী ও ঠিকাদাররা মিলে  খেয়ে যাচ্ছে পাহাড় ও বালি।উভয় গ্রুপ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পকেট ভরিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। বিএনপি সরকারের আমলে শুরু হওয়া প্যারাবন ও পাহাড় কাটা  সে থেকে এই পর্যন্ত থেমে নেই। বার বার এ কাজে সবচেয়ে নাটকীয় ভূমিকায় দেখা গেছে সরকারের কর্তৃপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান বন বিভাগকে। বিশাল অংকের অবৈধ লেনদেনের বিপরীতে তারাই সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে ভূমিখেকোদের। বিএনপি জামাতের নেতারা প্যারাবন ধ্বংসে ব্যাবহার করছে কিছু সুবিধাবাদি আওয়ামী লীগ নেতাদের।যার ফলে নীরবে ধীরলয়ে চলছে এই দখল নৈরাজ্য। যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার সুযোগে দূর উপকূলীয় এলাকায় টানা কাটা হচ্ছে, প্যারা ও পাহাড়। রাসায়নিক প্রয়োগ করে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্যারাবন- দ্বীপরক্ষা বাইন গাছ, উদ্ভিদ প্রকৃতি। দেওয়া হচ্ছে বাঁধ, তৈরি করা হচ্ছে চিংড়ী জমি। এ সব দেখেও যেনো কেউ দেখছে না।সেভাবে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। তৈরি করা হচ্ছে ভয়ের সংস্কৃতি। সম্ভাব্য সব অর্গান ম্যানেজ করেই চলে এই নৈরাজ্য।
নেহায়েত বিষয়গুলো জানাজানি হলে গণমাধ্যমকে একটি ‘পিউরম্যান’ ধরণের বক্তব্য দিয়ে, ছবিসর্বস্ব অভিযান দেখিয়ে কিংবা ভূমিখেকোদের থেকে তুলনামূলক দূর্বল ব্যক্তিদের নামের তালিকা বাছাই করে দায়সারাভারে একটি মামলা করেই কর্তব্য শেষ করেন। যাতে কাজের কাজ কিছুই হয় না। এই ‘সিস্টেম’ দিয়েই অনেকটা প্রতিষ্ঠা করে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্টদের।
গভীর ভাবে খোঁজ নিতেই দেখা যায়- এ সব দখলকাণ্ডের সাথে দ্বীপে শীর্ষ নেতা ও তাদের নিকটজনরাই থাকেন এই অনৈতিক সম্পদ বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায়। দ্বীপের বড়লোক ও তাদের স্বজনদের সম্পদশালী করে দেওয়ার এ প্রষিদ্ধ তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। দ্বীপের পশ্চিমের বিশাল এলাকা থেকে শুরু করে পূর্বসহ সবদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই ক্ষমতাচর্চিত অবৈধ দখলের প্রতিযোগিতা। অর্থ, ভয় ও ক্ষমতার মিশেলে নীরবই থেকে যায় সব।
এভাবে একবার দখল পেতে পারলেই আর পিছনে তাকাতে হয় না। সরকারি সম্পদের উপর ব্যক্তির মালিকানা প্রতিষ্ঠা পেয়ে একে একে বড় লোক হয়ে উঠছে ক্ষমতা ও ক্ষমতার আশপাশে থাকা ব্যক্তিগুলো। গতকাল ০৫ মে শুক্রবার প্রতিবেদক সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, সরকারের বহু স্বপ্নময় এলাকা সোনাদিয়া ও ঘটিভাঙ্গা এলাকার পাশে প্যারা কেটে  বিশাল এরিয়া দখল করে তৈরি করা হচ্ছে চিংড়ি ঘের। দখলকারিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলে এই জমির কাগজ পত্র তাদের রয়েছে। বন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে বন বিভাগ জানান, এটা তাদের আওতায় নেই। এটা বেজার অধিনে চলে গেছে।  আমজাদ নামক  বেজার এক কর্মকর্তাকে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর উনি কথা না বলে ফোন কেটে দেন।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইয়াছিন’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পাহাড় ও প্যারাবন দেখার দায়িত্ব বন বিভাগের। এদিকে মহেশখালীর চতুর্পাশের প্যারাবন তথা ধলঘাটা, মাতারবাড়ি, কালারমারছড়া,হোয়ানক,বড়মহেশখালী, কুতুবজোম,পৌরসভা, ছোট মহেশখালী ও শাপলাপুর সহ সবখানেই চলছে প্যারা ও পাহাড় নিধনের কাজ, ক্রমান্বয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে মহেশখালীর সাধারণ জনতা। এসব বন্ধে দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না কেউ। এদিকে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রনব কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাইলে আমার ফোর্স সবসময় প্রস্তুত। এসব উচ্ছেদ অভিযানে আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাবো। পরিবেশ বাদী সংঘটন বাপার মহেশখালী উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আবুবকর ও মহেশখালীর সর্ববৃহৎ সমাজিক সংগঠন মহেশখালী উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদুল আলম দেওয়ান মহেশখালীকে বাচাতে প্যারাবন ও পাহাড় কাটা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply