শবেকদর বা কদরের রাতে আল্লাহ কোরআন নাজিল করেছেন এবং রাতকে হাজার মাসের চেয়ে মর্যাদাবান ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রাতে। আর মহিমান্বিত রাত সম্পর্কে তুমি কি জানো? মহিমান্বিত রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা : কদর, আয়াত : ১-৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে জেগে থাকবে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
‘লাইলাতুল কদর’ কোনটি?বেশির ভাগ হাদিসবিশারদের মতে, লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত রমজানের শেষ দশকে রয়েছে। এ ব্যাপারে বিশুদ্ধ হাদিসে ছয় ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, রমজানের শেষ দশকের প্রত্যেক বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করা আবশ্যক। কেউ যদি তাতে অক্ষম হয়, তবে সে যেন শেষ তিন রাতে আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করে।
‘কদর’ অনুসন্ধানে চার আমল
হাদিসের আলোকে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধানে চারটি আমলের কথা বলেছেন।
তিন. ক্ষমা প্রার্থনা : আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি জানতে পারি লাইলাতুল কদর কোনটি তাহলে আমি সে রাতে কী বলব? তিনি বলেন—তুমি বোলো, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউয়ুন কারিমুন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফাফু আন্নি। অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু, আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫১৩)
চার. বিজোড় রাতে ইবাদতে মগ্ন থাকা : যেহেতু রাসুলুল্লাহ (সা.) লাইলাতুল কদর অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন, তাই শেষ দশকের প্রত্যেক বিজোড় রাতকে ইবাদতের জন্য অবসর রাখা এবং তাতে ইবাদতে মগ্ন থাকা উত্তম। কেননা রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কোরো। (সহিহ বুখারি : ২০১৭)
ওলামায়ে কেরাম এ রাতে সম্মিলিত ইবাদতের পরিবর্তে একান্তে ইবাদত করতে উত্সাহী করেছেন। যদি কারো ঘরে ইবাদতের উত্তম পরিবেশ না থাকে, তবে সে মসজিদে সম্মিলিত ইবাদত, জিকির ও মোনাজাতে অংশ নিতে পারে।
আল্লাহ সবাইকে লাইলাতুল কদরের বরকত ও অনুগ্রহ দান করুন। আমিন।