স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী একমাত্র রাজনৈতিক নেতা যিনি কখনো নিজের স্বার্থে রাজনীতি করেন নাই বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, তিনি জনগণের কথা ভেবেছেন। তিনি আমাদের মুক্তি আন্দোলন শিখিয়েছেন। স্বাধীনতার অর্থ জানিয়েছেন। স্বাধীনতা স্বপ্ন দেখিয়েছেন। দুর্ভাগ্য আমরা তার মতো সাহসী হইনি।
শনিবার (১২ ডিসম্বর) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনায় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মওলানা ভাসানীর প্রদর্শিত পথেই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র রক্ষায় এবং দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে লড়াই ও ষংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে সবার মুক্তি একমাত্র গণতন্ত্রে, জবাবদিহিতাই গণতন্ত্র।
তিনি আরো বলেন, দেশ করোনার পাশাপাশি দুর্নীতিবাজদের কালো থাবায় ক্ষত-বিক্ষত। চারদিকে দুর্নীতিবাজদের জয়জয়কার। রাজনীতি আজ দুর্নীতিবাজদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। দুর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রামে মওলানা ভাসানী সমগ্র জাতির অনুপ্রেরণার উৎস। তার সংগ্রামী জীবন আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে পথ দেখায়।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, মওলানা ভাসানীর আসামের কুখ্যাত ‘লাইন প্রথার’ বিরুদ্ধে তার যে সংগ্রাম, তা দক্ষিণ আফ্রিকায় মহাত্মা গান্ধীর বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে তুলনীয়। তার রাজনীতির কেন্দ্রে ছিল কৃষক, মজদুর, ভূমিহীন, বঞ্চিত-শোষিত জনগণ। কেবল বাংলাদেশে নয়; উপমহাদেশের রাজনীতিতেও মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী নেতা। তিনি জীবনাচরণে ধর্মপ্রাণ ছিলেন; কিন্তু তার রাজনীতি ছিল জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব বঞ্চিত মানুষের জন্য।
তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী বহুবার বহু উপলক্ষে বলেছেন, ‘শোষকের কোনো জাতি নাই, ধর্ম নাই, দেশ নাই, বর্ণ নাই, তার একমাত্র পরিচয় সে শোষক।’ শোষকের অস্তিত্ব¡ তিনি যেখানেই অনুভব করেছেন, প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন।
তিনি আরো বলেন, এক দলে না থাকা সত্তে¡ও বঙ্গবন্ধু জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মওলানা ভাসানীর স্নেহ পেয়েছেন। অবশ্য দুই নেতার রাজনৈতিক আদর্শের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য ছিল। বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপাদমস্তক জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক। অপরদিকে মওলানা ভাসানী ছিলেন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনীতির মানুষ।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বাংলাদেশ কংগ্রেস মহাসচিব এডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম, জয়বাংলা মঞ্চের সভাপতি মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জেএসপি চেয়ারম্যান মিজানুল রহমান মিজু, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, বাংলাদেশ নাগরিক জোট চেয়ারম্যান এইচ সিদ্দিকুর রহমান খোরশেদ, জাতীয় জনতা ফোরাম সভাপতি মোহাম্মদ ওয়ালিদ সিদ্দিকী তালুকদার, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন সভাপতি এইচ এম মনিরুজ্জামান প্রমুখ।