পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানি শুরু হচ্ছে আজ শনিবার থেকে। বিকেল সাড়ে ৫টায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ডিজেল আমদানি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। প্রথম দিন পাইপলাইনে আসবে এক কোটি লিটার ডিজেল। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জ্বালানি খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানিকে বাংলাদেশ বিকল্প উৎস হিসেবে দেখছে। ভবিষ্যতে বিশ্ববাজারে সংকট তৈরি হলেও পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাড়তি ডিজেল আমদানি করা যাবে।
বিপিসির পক্ষে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (এমপিএল) ও ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। পাইপলাইনে ভারত থেকে ডিজেল আমদানির জন্য ভারত অংশে পাঁচ কিলোমিটারসহ প্রায় ১৩১.৫ কিলোমিটার ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপিএল) নির্মাণ করা হয়েছে।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে ৭০ থেকে ৭২ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ডিজেলের চাহিদা ৪৮ থেকে ৪৯ লাখ মেট্রিক টন, যার ৮০ শতাংশ সরকার আমদানি করে। বর্তমানে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। আর পরিশোধিত তেল আমদানি করা হয় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আরব আমিরাত, কুয়েত, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে কম খরচে নতুন উৎস থেকে ডিজেল আমদানির পথ খুঁজছে সরকার। ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আমদানিকে বিকল্প উৎস হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ডিজেল আমদানির জন্য রাশিয়া ও ব্রুনেইর সঙ্গেও আলোচনা করছে সরকার।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘পাইপলাইনের রিসিপ্ট টার্মিনাল কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ অটোমেটিক মেশিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। এখানে হিউম্যানের হাতের কোনো কার্যক্রম থাকবে না। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল সরবরাহ চালু হলে উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মোতাবেক ডিজেল ভারত থেকে সহজ, সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্নভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে আমদানি করা যাবে। এতে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা আরো সুদৃঢ় হবে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত থেকে আসা ডিজেলে সালফারের মান ১০ পিপিএমের নিচে থাকবে। আন্তর্জাতিক সূচক অনুযায়ী এটি অত্যন্ত ভালোমানের তেল।’
আগে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে ট্রাকে করে তেল সরবরাহ করা হতো। এতে পরিবহনসহ নানা কারণে ডিজেলসংকটে সেচকাজ ব্যাহত হতো। এই পাইপলাইন দিয়ে তেল এলে এসব জেলায় কৃষির সেচে ডিজেল ও বিদ্যুৎ পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে বলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন