ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালে এই প্রথম ফেলট টেট্রালজি রোগীর সফল অস্ত্রোপচার সম্পূর্ণ হয়েছে।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ডা. রনজিত বিশ্বাস জানান, সুমি আক্তার ও তার নবজাতক ছেলে সুস্থ হয়ে বাড়িত ফিরেছেন।
সুমি আক্তার কসবা উপজেলার মূল্যগ্রাম ইউনিয়নের রাইতলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তিনি ৫ম বারের মতো গর্ভবতী হয়। পরে শারিরীক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সুমি আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের ভর্তি হন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল সুমি আক্তার জটিল রোগ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের ভর্তি হয়। সুমি জন্মগত হৃদরোগ ফেলট টেট্রালজি (Felot tetralogy) রোগে সংক্রমণ ছিলেন। আবার তিনি ৫ম বারের মতো গর্ভবতী হউন।
সুমি আক্তার গর্ভকালীন সময় ৩৯ সপ্তাহ চলছিল। সে উচ্চ-রক্তচাপের জন্য প্রি একলামসিয়া উইথ হেলফ সিন্ড্রোম ও আইইউজিআর রোগে ভুগতেছিলেন। এমন সময় ওই গর্ভবতী মহিলার অস্ত্রোপচার করা একটি চ্যালেঞ্জিং ছিল।
সুমি আক্তারের বোন রানু বেগম জানান, ফেলট টেট্রালজি সমস্যার কারনে এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিল সুমি। বর্তমানে মহামারী করোনা ভাইরাসের জন্যে সুমিকে ঢাকা নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার মত কোন পথ ছিল না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় কোথাও আইসিইউ/সিসিইউ ব্যবস্থা নেয়। পরে সুমিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডাক্তার আবু সাঈদ স্যারের মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। জটিল অস্ত্রোপচার শেষে তার বোন সুমি ও নবজাতক শিশু সুস্থ আছেন বলে তিনি জানান।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক রনজিত বিশ্বাস জানান, প্রথমে সুমির রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানি। তার বোন রানু বেগম ও সুমির শ্বশুর রিস্ক নিয়ে অস্ত্রোপচার করাতে রাজী হন। পরে ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি সার্জারী টিম ও এনেস্থিসিয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মমতাজুল হককে নিয়ে সফল অস্ত্রোপচার করি। অস্ত্রোপচারের পর মা ও নবজাতক দুইজনই সুস্থ আছেন।
তিনি আরও বলেন, রোগীর সফল অস্ত্রোপচার পর তিনি একটি পোস্ট অপারেটিভ ক্লোজ মনিটরিং ব্যবস্থাপনা সেল তৈরি করেন। তার মাধ্যমে রোগীকে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি এপ্রোচ প্রয়োগ করেন। তাছাড়া সুমি হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ফলোআপেও ছিলেন। আজকে সুমী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে নবজাতক ছেলে শিশু নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।
বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালীন সময়ে করোনা রোগীসহ বিভিন্ন জটিল রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে এই অঞ্চলের অসুস্থ মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল।