ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
৯ বছর বয়সী মানুষিক প্রতিবন্ধী এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মো. সাত্তার মিয়ার (৫৬) নামের এক মুদি দোকানীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা হয়েছে।
শিশু ধর্ষণ চেষ্টার মামলার আসামী মো. সাত্তার মিয়াকে আটকের জন্য খোঁজছে সদর মডেল থানার পুলিশ। পুলিশ এখনোও সাত্তার মিয়াকে আটক করতে পারিনি।
রবিবার (১৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভিকটিমের বাবা ও মামলার বাদি মো. মানিক মিয়া সাংবাদিকদের কাছে ধর্ষণ চেষ্টার মামলার আসামীর সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানান।
এর আগে ৫ জুলাই সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার পশ্চিম ফুলবাড়িয়া মো. সাত্তার মিয়ার পূর্ব ভিটের টিনসেড ঘরে এ ঘটনা ঘটে।
রবিবার দুপুরে সরজমিন গিয়ে লক্ষ্য করা যায়, পশ্চিম ফুলবাড়িয়ার এলাকার সাত্তার মিয়া ও মুসলিম মিয়ার মুদি-মালের দোকান দুইটি তালা লাগানো। কারন সাত্তার মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা করায় তার ভাই মুসলিম মিয়াসহ পরিবারের সবাই পালিয়ে গেছে৷
ভিকটিমের বাবা মানিক মিয়া জানান, এলাকার মৃত আব্দল রাজ্জাক মিয়ার দুই ছেলে সাত্তার মিয়া ও মুসলিম মিয়া মুদি-মালের ব্যবসা করেন। তার ভাড়া-বাড়ির অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের চকলেট ও আইসক্রিমের প্রলোভন দেখিয়ে নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগ আছে। তারা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ভাড়াটিয়ারা কোন প্রতিবাদ করতে পারেন না। তার মেয়েকেও সাত্তার মিয়া ছেড়ে নাই। তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টার প্রতিবাদে সদর মডেল থানায় মামলা করায় মানিক মিয়াকে বিভিন্ন ভাবে বিপদে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন সাত্তার মিয়া। এদিকে সাত্তার মিয়া বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা মামলাটি ঊঠিয়ে নেওয়ার জন্য ও এ বিষয়টি নিয়ে যেন বাড়াবাড়ি না করেন মানিক মিয়াকে হুমকিও দিচ্ছেন। সঠিক বিচারের দাবিতে মানিক মিয়া এখন দিশেহারা।
এলাকাবাসী জানায়, সাত্তার মিয়া ও তার ভাই মুসলিম মিয়া এলাকার ভেতরে মুদি-মালের ব্যবসার আদলে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের মজার প্রলোভন দেখিয়ে নির্যাতন ও ধর্ষণ চেষ্টা করে থাকেন । এর আগে এলাকার ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ২ লক্ষ টাকা জরিমানাও দেন সাত্তার মিয়া ও মুসলিম মিয়া। তার ভাই মুসলিম মিয়া শিশু ও নারী নির্যাতন মামলা ছয় মাস কারাগারেও ছিলেন। তাদের বাসাবাড়িতে বিভিন্ন জেলার অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবারকে ভাড়া দিয়ে থাকেন। তারা সঠিক সময় ভাড়া না দিতে চাইলে ওই পরিবারকে নির্যাতন করেন। তাদের ভয়ে এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করতে পারেন না ভাড়াটিয়ারা। তাদের এসব পাপ কাজের জন্য এলাকার মানুষ আজ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। এলাকার কেউ তাদেরকে ভাল বলে না। তাদের অপকর্ম যদি দমন না করা হয়, তাহলে এলাকার ছেলে-মেয়েদের নিরাপত্তা খুব কঠিন হয়ে যাবে। এলাকাবাসী সাত্তার মিয়ার সঠিক বিচারের দাবি জানান।
এব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ৯ বছর বয়সী একটি মেয়ে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনের দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামী সাত্তারকে আটকের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে। খুব শীঘ্রই আসামীকে আটক করা হবে। আসামী যে কেউ হউক না কেন আইন সবার জন্য সমান। আসামীকে ধরতে এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের ফুলবাড়িয়ায় ৯ বছরের বয়সী ভিকটিম মজা কিনতে সাত্তারের দোকানে যায়। পরে সাত্তার চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিশুটিকে মদি-মালের দোকানের পিছনের একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ওই শিশুর চিতকার শুনে এলাকার যুবকরা এগিয়ে আসেন। তারপর সাত্তার মিয়া পালিয়ে যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের গাইনী বিভাগে নিয়ে ভর্তি করে হয়েছিল। এব্যাপারে সদর মডেল থানায় একটি মামলা হয়।