ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
হেফাজত ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শফিকুল আলম এম এসসি।
রোববার (১১ এপ্রিল) দুপুর ১টায় জেলা পরিষদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতা করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজত ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। তারা জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলোসহ সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বলেন, গত ২৬ মার্চ হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে মাদরাসাছাত্র এবং দুস্কৃতিকারীরা শহরের কাউতলি এলাকার জেলা পরিষদের ডাককাংলোর প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় ডাকবাংলোতে অবস্থানরত তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দারোয়ান কাম কেয়ারটেকার কোনোরকমে আত্মরক্ষা করে। এছাড়া বাংলোর তৃতীয় তলার উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত একজন শ্রমিক লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের হরতাল চলাকালে বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র ও দুস্কৃতিকারীরা অতর্কিতভাবে জেলা পরিষদ কার্যালয়ের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা ভবনের আঙিনায় থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরে মাদরাসার ছাত্র ও দুস্কৃতিকারীরা কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে কার্যালয়ের নিচতলায় অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় তারা গ্যারেজে থাকা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর দ্বিতীয়তলায় এসে বিভিন্ন কক্ষের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর করে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো মেরামতে ২ কোটি ৮ লাখ ২০ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে। আর সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতি টাকার অংকে আনুমানিক ৫ কোটি টাকা হবে। যারা রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করেছে, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান চেয়ারম্যান শফিকুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, সচিব মেহের নিগার,প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আজাদ,সদস্য জহিরুল ইসলাম জহির, সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হামিদ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল বাক্কী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা রতিশ চন্দ্র রায়, হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা কাজী ছানাউল হক, প্রধান সহকারী নুরুর রহমান, উচ্চমান সহকারী হাজী মোঃ আমির হোসেন, মোঃ আব্দুর রহিমসহ জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীগন।