ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করে পথ চলেছেন অবিরাম; কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে পিছপা হয়নি। তাঁরই আদর্শে গণ মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চান বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার।
পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ঈশ্বরগঞ্জ থানা আক্রমন করতে গিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক গ্রেনেড চার্জে আহত হই, আমার সাথের সাতজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার অপরাধে ঈশ্বরগঞ্জের মুসলিমলীগ, রাজাকার, আলবদর ও পাকিস্তানী হানাদাররা আমার বাড়ী-ঘর পুড়িয়ে দেয়। আমার বাবা কাদির উদ্দিন আহমেদ ও আমার বড় ভাই রইছ উদ্দিন আহমেদকে গাছে লটকিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে দীর্ঘ দিন। ১৯৭৫ সালে পাকিস্তানের দালাল কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে ঈশ্বরগঞ্জে আমি আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়ে প্রতিবাদ করলে খন্দকার মোস্তাক ও জিয়াউর রহমান সরকার কর্তৃক গ্রেফতার হই। হত্যার প্রতিবাদ করায় দীর্ঘদিন কারাবরণ করি।
পৌর মেয়র বলেন, জনগণের ভালোবাসায় ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়ে যে উন্নয়ন করেছি সবটুকুই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবদান। আমার সময়কালে পৌরসভার উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি বরাদ্ধ পেয়েছি। পৌরসভায় যেসব উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং যেগুলো চলমান রয়েছে তা আমার আমলেই সরকার থেকে বরাদ্ধ হয়েছে। বরাদ্ধকৃত অর্থে যে উন্নয়ন আমি করতে পেরেছি আর যেটুকু বাকি রয়েছে আগামী দিনে যদি পৌরবাসী আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে পৌরসভার উন্নয়নের কোন কিছুই বাকী থাকবে না।
মেয়র আব্দুস সাত্তার আরো বলেন, জীবনে আমার চাওয়া পাওয়ার কোন কিছু নেই। বঙ্গবন্ধুর ডাকে জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। যুদ্ধউত্তরকালে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হওয়ার কারণে দলের কোন পদে থেকে সক্রিয় ভাবে রাজনীতি করতে পারিনি। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দলীয় প্রতীক নৌকা দাবি করছি। আর এটাই আমার নেত্রীর কাছে জীবনের শেষ চাওয়া। আমার বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জন নেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক উপহার দিয়ে পৌরবাসীর সেবা করার সুযোগ দিবেন।
তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশরতœ শেখ হাসিনার আদর্শের সৈনিক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও দেশরতœ শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ও সারাজীবন মানুষের কল্যাণে এবং এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই। এলাকার মানুষের পাশে থেকে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, অভাব অভিযোগের কথা জেনেছি। স্বাধ্যমত তাদের সেবা করে যাচ্ছি। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেশি পছন্দ করেন। তাই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে বিজয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ রুপান্তরের ঘোষণা দিয়ে সারা দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশ বিশ্বে এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা তৃণমূল পর্যায়ে বাস্তবায়ন করতে হলে সৎ যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক সম্মান দিয়েছেন। ঈশ্বরগঞ্জ পৌরবাসী আমাকে ভালবেসে মেয়র নির্বাচিত করেছিল। আমি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নিজের ভাগ্যের উন্নয়নের চিন্তা না করে দিনরাত পৌর সভার উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করেছি। নির্বাচনের সময় যে ওয়াদা করেছিলাম তার সিংহভাগ পূরণ করতে চেষ্টা করেছি। আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি আপনাদের অসম্মান ও অমর্যাদা হয় এমন কোন কাজ করেনি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাউকে হয়রানী করিনি। পৌরসভার সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছি। পৌরবাসী যদি আমার কর্মকান্ড ন্যায় বিচারের চোখে দেখেন তবে আমার বিশ্বাস আগামী নির্বাচনে আমাকে ভোট দিয়ে পুনরায় পৌরসভার উন্নয়ন কাজের গতিধারা অব্যাহত রাখার সুযোগ দিবেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সহকারী ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাই বলেন, গত পৌর নির্বাচনের আগে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে একটা কথাই বলেছিলাম যে আপনারা একবার আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ করে দিন দেখেন আমরা কি করি। পৌরসভা গঠনের পর থেকে গত ১৭ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি তা এই মেয়রের আমলে তার চেয়ে অধিক উন্নয়ন হয়েছে।