অনলাইন ডেস্ক:
বিশ্বে নাগরিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা কমছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আজ শনিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন। মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবাধিকার সুরক্ষা ও লঙ্ঘনের প্রতিকার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন।
১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়।
১৯৫০ সালের ১০ ডিসেম্বর দিনটিকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
মানবাধিকার দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘মানব-মর্যাদা, স্বাধীনতা আর ন্যায়পরায়ণতা, দাঁড়াব সকলেই অধিকারের সুরক্ষায়। ’ দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন মানববন্ধন, আলোচনাসভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে।মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বিশ্ব মানবাধিকার বিষয়ে অভূতপূর্ব ও আন্তঃসম্পর্কযুক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বাড়ছে, যা কোটি মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার খর্ব করছে। নাগরিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা কমছে। ’
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকের নিরাপত্তা বিপজ্জনকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে। আস্থা উবে যাচ্ছে, বিশেষত তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, কভিড-১৯ মহামারি নারী ও মেয়েশিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্ণবাদ, অসহনশীলতা ও বৈষম্য লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হ্রাস ও দূষণ—এই ত্রিমাত্রিক সংকটের কারণে মানবাধিকারের জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আবির্ভূত হচ্ছে।
গুতেরেস বলেন, ‘নতুন কিছু প্রযুক্তির কারণে মানবাধিকারের জন্য যে হুমকিগুলো সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো মাত্রই অনুধাবন করতে শুরু করেছি আমরা। এই কঠিন সময় আমাদের প্রতি সব ধরনের মানবাধিকার—নাগরিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকারের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আবারও উদ্যমী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। ’
বাংলাদেশের অঙ্গীকার
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে আশা প্রকাশ করেন, মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের প্রতিকার পাওয়ার পথ সুগম করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তিনি উল্লেখ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সব মানবাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে মানবাধিকার সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, সিভিল সোসাইটি, গণমাধ্যম, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
১২ সংগঠনের যৌথ বিবৃতি
মানবাধিকার দিবসের প্রাক্কালে গতকাল রবার্ট এফ কেনেডি ফর হিউম্যান রাইটসসহ ১২টি সংগঠন বাংলাদেশ নিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ ও দায়মুক্তি অবসানের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন