শিক্ষা ডেস্ক:
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের অনলাইন ক্লাসে প্রকাশ্যে ধূমপানের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছবি ভাইরাল হওয়া ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদার। তিনি ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ক্লাস চলাকালীন ধূমপান করার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষকের দাবি, ক্লাসরুমের মতো একটি ‘পাবলিক ফোরাম’ এ ধূমপান করলে তা অনেককে উৎসাহিত করতে পারে। এতে অনেক শিক্ষার্থী ধূমপানে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। এ ধরনের ফোরামে ধূমপান করলে তার প্রভাব অনেক বেশি লোকের মধ্যে ছড়ায়। তখন শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষকদের জন্য যে সম্মানবোধ থাকা দরকার তা কমে যাবে।
জানা যায়, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলে গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে অনলাইনে ক্লাস ও পরবর্তীতে টার্মটেস্ট নেওয়া শুরু করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য বিভাগের মতো ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অনলাইন ক্লাস, টার্মটেস্ট চলছিল। কিন্তু ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদার কয়েকটি ব্যাচের সাথে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সময় একাধিকবার ধূমপান করেন। পরবর্তীতে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ধূমপানকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। একজন শিক্ষক ধূমপান করতে পারেন, তবে শিক্ষার্থীদের সামনে ধূমপান না করা উচিত ছিল। ছাত্রদের সামনে ধূমপান করা মানে ছাত্রদেরকে উৎসাহিত করা।
শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মো. মহিবুল আলম বলেন, শুধু শিক্ষার্থী না, যারা ধূমপান করেন না তাদের সামনে প্রকাশ্যে ধূমপান করা সম্পূর্ণ অনৈতিক কাজ। এ ধরনের অনৈতিক কাজ যারা করবে তাদের দায়ভার শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি নিবে না। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ধূমপান মুক্ত এলাকা। এখানে ধূমপান করা, মাদকগ্রহণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এ আইন মেনে চলার আহ্বান জানান উপাচার্য। তবে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সামনে একজন শিক্ষকের ধূমপান করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।