ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
‘বিয়ের পর স্বামীর পেট ব্যাথা হলে মারা যায়’এ কুসংস্কার কথা শুনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় জান্নাত (১৭) নামের এক গৃহবধূ বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার (১৪ জুলাই) ভোর সোয়া ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জান্নাত সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল গ্রামের বড়হাটি এলাকায় আলী হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আটমাস আগে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের বুধল গ্রামের হীরা মিয়ার ছেলে আলী হোসেনের সঙ্গে তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের তেলীনগর গ্রামের করম আলীর মেয়ে জান্নাতের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসার সুখে চলছি। গত তিনদিন আগে জান্নাতের স্বামী আলী হোসেনের পেটে ব্যাথা শুরু হয়। এই ব্যাথা দুদিনেও ভালো হচ্ছিল না।
এরইমধ্যে আলী হোসেনের পেট ব্যাথা নিয়ে প্রতিবেশীরা বলাবলি করছিলেন, ‘বিয়ের পর স্বামীর পেট ব্যথা হলে মারা যায়’। এই কথা শুনার পর জান্নাত মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। স্বামীর মৃত্যু কোন ভাবে মেনে নিতে পারবেন না।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জান্নাত সিদ্ধান্ত নেন স্বামী মারা যাওয়ার আগে নিজে মারা যাবেন। পরে জান্নাত ঘরে থাকা ইঁদুর মারা ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিষপান করার কারণটি সদর মডেল থানার এএসআই হারুন-উর রশীদের কাছে বলে যান।
রাত যত গভীর হচ্ছে, জান্নাতের পৃথিবী যেন তত ছোট হয়ে আসছে। অবশেষে বুধবার ভোরে মারা যান জান্নাত। স্বামীর মৃত্যু সহ্য করতে পারবে না বলে জান্নাত আত্মহত্যা করেছে কিন্তু সেই স্বামী জান্নাতের মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়।
জান্নাতের স্বামী আলী হোসেন জানান, আমরা বাড়িতে এসেছি। আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে হাসপাতালে আসবো। আমার পেট ব্যাথার কারণে জান্নাত বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমার পেট ব্যাথা ভালো হয়ে গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘বিষপান করায় একটি মেয়ে মারা গেছে বলে জানতে পেরেছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। ময়নাতদন্তের পর নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।