কুমিল্লা, নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি:
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভা নির্বাচন সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে বিকেল ৪টায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। পৌর সভার ৯ ওয়ার্ডে ৪৩ জন কাউন্সিলর ও ১১ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হন সাবেক মেয়র আব্দুল মালেক।
৯ ওয়ার্ড ও ৩ সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে বিজয়ী ও প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীরা হলেন ১নং ওয়ার্ডে টেবিল ল্যাম্প প্রতিক নিয়ে মোশারফ হোসেন ৫৫১ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পানির বোতল প্রতিক মো: হানিফ ৪৫৭ ভোট। ২নং ওয়ার্ডে উটপাখি প্রতিক নিয়ে আক্তারুজ্জামান ৫১৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টিউবলাইট প্রতিক আবুল খায়ের ৪৩০ ভোট। ৩নং ওয়ার্ডে পানির বোতল প্রতিক নিয়ে জহির উল্লাহ সুমন ১৫৬৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টেবিল ল্যাম্প প্রতিক রেজাউল হক রেজু ৬৪৭ ভোট। ৪নং ওয়ার্ডে পাঞ্জাবি প্রতিক নিয়ে শাখাওয়াত হোসেন সুমন ৪৩৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পানির বোতল প্রতিক ইমরান হোসেন বাহার ৩৬২ ভোট। ৫নং ওয়ার্ডে পাঞ্জাবি প্রতিক নিয়ে শেখ রাসেল মজুমদার ১১৮৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উটপাখি প্রতিক সেলিম জাহাঙ্গীর ৩৭৪ ভোট। ৬নং ওয়ার্ডে উটপাখি প্রতিক নিয়ে ছাদেক হোসেন ৮৭০ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পাঞ্জাবি প্রতিক রুবেল হোসেন ৬৪১ ভোট। ৭নং ওয়ার্ডে উটপাখি প্রতিক নিয়ে জামাল হোসেন সোহাগ ৬৮৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পানির বোতল প্রতিক মেজবাউল আলম ২৩৮ ভোট। ৮নং ওয়ার্ডে টেবিল ল্যাম্প প্রতিক নিয়ে শাহ খুরশিদ আলম মজুমদার ৪২১ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পানির বোতল প্রতিক নিজাম উদ্দিন মজুমদার ৩৪২ ভোট। ৯নং ওয়ার্ডে পানির বোতল প্রতিক নিয়ে আবু জাফর ৫৫৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পাঞ্জাবি প্রতিক মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া ৪৪৫ ভোট।
সংরক্ষিত ১,২,৩ নং ওয়ার্ডে আনারস প্রতিক সাবিনা ইয়াসমিন ৩০৪৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চশমা প্রতিক সুফিয়া আক্তার ২১০৫ ভোট। সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডে টেলিফোন প্রতিক ফরিদা আক্তার ১০৮৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জবা ফুল প্রতিক রহিমা খাতুন ৯৫১ ভোট। সংরক্ষিত ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডে চশমা প্রতিক আয়েশা বেগম ১৭১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতিক সালেহা বেগম ১১৭৯ ভোট।
হাছান মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুউদ্দিন কালু, থানা কমপ্লেক্স শিশু নিকেতন কেন্দ্রে ভোট দেন মেয়র আব্দুল মালেক, কেন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন ভূমি আপিল বোর্ড সচিব আবু তালেব, দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন নরসিংদী শিল্পাঞ্চল সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ রাশেদ্জ্জুামান, মডেল মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন উপজেলা আ‘লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু ইউছুফ, ধাতীশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট অধ্যক্ষ সায়েম মাহবুব, কেন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন নাঙ্গলকোট প্রেসক্লাব সিনিয়র সহ-সভাপতি মাঈন উদ্দিন দুলাল।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ইভিএম এ ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোট গ্রহণের সময় ৩নং ওয়ার্ডের মডেল মহিলা কলেজ কেন্দ্রের পাশে সকাল ১০টার দিকে চাপাতিসহ ফরহাদ হোসেন, জুনায়েদ হোসেন ও শামীম আহম্মেদ নামে স্থানীয় ৩ যুবককে আটক করে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী। ইভিএম এর মাধ্যমে নাঙ্গলকোট পৌরসভায় প্রথম ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট প্রদানে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও কয়েকটি কেন্দ্রে যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে কিছু সময় ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। ৭নং ওয়ার্ডের কেন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পাঞ্জাবি প্রতিকের প্রার্থী নূর গোলশাহকে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কর্তৃক মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে ৮নং ওয়ার্ডে বিকেলে ভোটের ফলাফল দেয়াকে কেন্দ্র করে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে এক প্রার্থীর সদস্যদের সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন আহত হন বলে জানা গেছে।
নির্বাচন চলাকালে পুলিশ, র্যাব, ডিবি, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য পৌর এলাকায় মোতায়েন ছিল। তাছাড়াও প্রত্যেক কেন্দ্রে ১ জন করে নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচন চলাকালে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ বিপিএম’সহ উদ্ধর্তন প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।