অনলাইন ডেস্ক:
রাজধানী ঢাকায় গত বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি বাস পোড়ানোর ঘটনার পেছনে কারা আছে, তার অনেক তথ্যই সরকারের হাতে এসেছে। এসব ঘটনায় কারা পেছনে থেকে টাকা ঢালছে, তাদের অনেক তথ্যই গোয়েন্দারা এরই মধ্যে বের করেছে। এদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের এমনটাই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের এক সভায় তিনি এমন তথ্য জানান। সভায় সাত উপজেলা, পাঁচ পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাস পোড়ানোর সূত্র ধরে নানা বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। এগুলো কঠোর হস্তে দমন করা হবে। কারা জড়িত ছিল, তা অনেকটাই বের করা গেছে। ফোনকলের সূত্র ধরেও অনেক কিছু পাওয়া গেছে। কারা এসবে টাকা দিয়েছে, তাদেরও বের করা হচ্ছে।
সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অপতৎপরতার বিষয়টিও আলোচনা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীর সাবেক কিছু কর্মকর্তা বিদেশে বসে দেশবিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা ইউটিউব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিত্তিহীন নানা গুজব ও কুৎসা রটাচ্ছে। ইউটিউবকে এখন গুজব ছড়ানোর বড় মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
দুঃসময়ে দায়িত্বশীল অনেকেই তাঁদের দায়িত্ব পালন থেকে দূরে থাকেন উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন অনেকেই তাঁদের দায়িত্ব পালন করেননি। যাঁদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল তাঁরা অনেকেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থেকেছেন। ফলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা সম্ভব হয়েছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, ‘সভায় বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উপস্থিত একাধিক নেতা বক্তব্য দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে সরকারকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টার বিষয়টিও আলোচনায় আসে। এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিও তাঁর মতামত জানিয়েছেন।’
স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত
বৈঠকে সাত উপজেলা, পাঁচ পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়ন পরিষদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ। সন্ধ্যায় দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সভায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাজশাহী বিভাগের নওগাঁর রাণীনগরে মো. আব্দুর রউফ, পাবনার ঈশ্বরদীতে মো. নায়েব আলী বিশ্বাস ও বেড়ায় মো. রেজাউল হককে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরার দেবহাটায় মো. মুজিবর রহমান, যশোরের বাঘারপাড়ায় ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় মো. জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে শাহনাজ বেগমকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
পৌরসভা নির্বাচনে রংপুর বিভাগের গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মো. আবু বক্কর প্রধান, ঢাকা বিভাগের মাদারীপুরের রাজৈরে নাজমা রশীদ, ফরিদপুরের মধুখালীতে খন্দকার মোরশেদ রহমান, ফরিদপুর সদরে অমিতাভ বোস, চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে তফাজ্জল হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রামের রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা ইউপিতে এস এম রেজাউল করিম ও বন্দবে ইউপিতে মো. আব্দুল কাদের, চর শৌলমারী ইউপিতে কে এম ফজলুল মণ্ডল, রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটের দলদলী ইউপিতে মো. আরজেদ আলী, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউপিতে আব্দুল হান্নান, বরিশাল বিভাগের বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে উত্তর উলানিয়া ইউপিতে মো. নূরুল ইসলাম, মেহেন্দিগঞ্জের দক্ষিণ উলানিয়া ইউপিতে কাজী আব্দুল হালিম, ঢাকা বিভাগের নরসিংদীর মনোহরদীর গোতাশিয়া ইউপিতে মো. মতিউর রহমান, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের ডিএম খালি ইউপিতে মহসিন হক বেপারী, ময়মনসিংহ বিভাগের নান্দাইলে জাহাঙ্গীরপুর ইউপিতে মোহাম্মদ আলী, সিলেট বিভাগে হবিগঞ্জ সদরে রাজিউড়া ইউপিতে বদরুল করিম দুলাল, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচাল ইউপিতে সি এম জয়নাল আবেদীন, চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লার মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউপিতে মোহাম্মদ ইকবাল সরকার, রাঙামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউপিতে সত্য চন্দ্র ত্রিপুরা, রাঙামাটি সদরের মগবান ইউপিতে বিনিময় চাকমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।