অনলাইন ডেস্ক:
সরকারের প্রধান প্রশাসনিক দপ্তর বাংলাদেশ সচিবালয়ে বিদ্যুতের ব্যবহার ৫০ শতাংশ কমেছে। কৃচ্ছ্রসাধনের ঘোষণার সময় সরকারি দপ্তরগুলোতে বিদ্যুতের ব্যবহার অন্তত ২৫ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সারা দেশে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নতুন অফিস সময় গতকাল বুধবার কার্যকর করা হয়েছে। ৯টা-৫টার বদলে গতকাল থেকে ৮টা-৩টা অফিস শুরু হয়েছে।
ব্যাংক-বীমায় ৯টা-৪টা সময়সূচি চালু হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে শুক্র ও শনিবার।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, সচিবালয়ে আগে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ছিল আট মেগাওয়াটের মতো। গত মঙ্গলবার এবং গতকাল বুধবার সচিবালয়ে বিদ্যুতের ব্যবহার হয়েছে গড়ে ৩.৯০ মেগাওয়াট করে। দুই দিন আগে সোমবার বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়েছিল চার মেগাওয়াট, যা আগের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম। আর কৃচ্ছ সাধনের শুরুর দিকে সচিবালয়ে পাঁচ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার হতো বলে ডিপিডিসি সূত্র জানিয়েছে।
অর্থ ভবনেই সাশ্রয় ১.৫ মেগাওয়াট : আগে অর্থ ভবনে ১৫০০ টনের কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহৃত হতো। তাতে প্রতিদিন প্রায় দুই মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হতো। গত মঙ্গলবার এই ভবনে মাত্র ০.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়েছে। সাশ্রয় ১.৫ মেগাওয়াট।
অর্থ ভবনে ৩০০ টনের পাঁচটি এসি আছে। আগে করিডরসহ সব জায়গায় এসি চালু থাকত। কৃচ্ছে র আওতায় এখন তিনটি এসি বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যবহার করা হচ্ছে দুটি (৬০০ টন)।
সচিবালয়ের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ই/এম) বখতিয়ার আহমেদ বলেন, সচিবালয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অর্থ ভবনের কেন্দ্রীয় এসি অত্যাধুনিক বিল্ডিং ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির (আইবিএমএস) মাধ্যমে কমানো হয়েছে। আগে দৈনিক ১২০০ টন এসি চালু থাকলেও এখন ৬০০ টন চলে।
লিফট ব্যবহার কমছে : সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সচিবালয়ের ১১ নম্বর ভবনে পাঁচটি লিফট আছে। এখন দুটি লিফট (৪ ও ৫ নম্বর) বন্ধ রাখা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লিফটের সামনে লেখা, ‘দ্বিতীয় তলায় লিফট থামবে না। ’ মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে এমন নানা ধরনের বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে।
কৃচ্ছ সাধন শুরুর আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের করিডরে বাতি জ্বালানো থাকত। এখন প্রায় সব ভবনে এসব বাতি বন্ধ থাকে। জানালার পর্দা সরিয়ে দিনের আলোয় অফিস করছেন অনেক কর্মকর্তা। একাধিক কর্মকর্তার রুমে গিয়ে দেখা যায়, বাতি বন্ধ, জানালার পর্দা সরানো; তাতেই কাজ করছেন কর্মকর্তারা। আবার আগে যেসব রুমে চারটি বাতি জ্বালানো হতো, এখন সেখানে দুটি বাতি জ্বালানো হচ্ছে।
ডিপিডিসির রমনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রহিমুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সচিবালয়ে কেন্দ্রীয় এসি বন্ধ থাকায় এখন সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে। সরকারি অন্যান্য দপ্তরের কেন্দ্রীয় এসি বন্ধ করা গেলে বিদ্যুৎ ব্যবহার আরো কমানো যাবে।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন