মাদারীপুর প্রতিনিধি: মীম আক্তার। খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারখালী গ্রামের মনির মিয়া ও হেনা দম্পতির সন্তান। বয়স সাত বছর। মা-বাবা আর দুই বোন নিয়েই তাদের সংসার। ওর দাদি মারা গেছেন রবিবার রাতে। সে খবরে বাবা-মার সঙ্গে যাচ্ছিল দাদিকে শেষবারের মতো দেখতে। কিন্তু দুর্ঘটনায় তার দাদির লাশ দাফনের আগেই হারিয়েছে পরিবারের সবাইকে। এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন মীমের বাবা মনির মিয়া (৩৮), মা হেনা বেগম (৩৬) এবং বোন সুমী আক্তার (৫) ও রুমি আক্তার (৩)। দুর্ঘটনায় স্পিডবোটটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ছিটকে নদীর তীরে বালুর মধ্যে পড়ে মীম। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাকে বেলা ৩টার দিকে নিয়ে আসা হয় শিবচরের কাঁঠালবাড়ীর হাজী ইয়াসিন মোল্লাকান্দি দোতার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। সেখানেই রাখা ছিল নিহতদের লাশ। এ সময় মীম তার বাবা, মা ও দুই বোনের লাশ শনাক্ত করে। কান্নায় ভেঙে পড়ে মীম। মীমের কান্নায় এলাকায় শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আহাজারিতে ওই এলাকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মীমের কান্না দেখে স্থানীয়রাও কান্নায় ভেঙে পড়েন। মীম বলে, ‘দাদির লাশ দেখতে খুলনা যাচ্ছিলাম বাবা-মার সঙ্গে। যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনায় বাবা, মা, দুই বোন মারা গেছে। আমি এখন কাদের কাছে থাকব!’ উল্লেখ্য, শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ীর বাংলাবাজার পুরনো ঘাটে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে স্পিডবোট ডুবিতে তিন শিশু, দুই নারীসহ ২৬ জন নিহত হন।