বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনা পৌরসভার মেয়র মো. শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৪ জুন দ্রুত বিচার আইনে করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান গত মঙ্গলবার এ স্থগিতাদেশ দেন।
অপরদিকে এর পূর্বে রোববার পৌর- মেয়রের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে করা এ মামলায় ৮ বছর পর চার্জ গঠন করা হয়।
বরগুনায় দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা এক মামলায় বরগুনা পৌরসভার মেয়র মো. শাহাদাত হোসেনসহ ৬ আসামির বিরুদ্ধে আট বছর পর অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। গত (৪ অক্টোবর) দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক মো. গাজী সিরাজুল ইসলাম এ অভিযোগ গঠন করেন। ২০১২ সালের ২৪ জুন বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত নাজির আক্তার হোসেন, সে সময়কার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে মেয়র মো. শাহাদাত হোসেনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অপর আসামীরা হলেন, পৌর কাউন্সিল রইসুল আলম রিপন, তৌহিদুর রহমান, আবু সালেহ, ফারুক সিকদার, ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আহাদ সোহাগ ও মো. ইউসুফ।
আদালত সূত্রে জানাগেছে, ২০১২ সালের ২৪ জুন বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত নাজির আক্তার হোসেন, সে সময়কার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এর পূর্বে ২১জুন সকালে শাহাদত হোসেন ঐ আদালতের এজলাসে ঊপস্থিত হয়ে অপর দ্রুত বিচার আদালতের বেঞ্চ সহকারি মিজানুর রহমান কামাল এবং অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেষ্ট আদালতে কর্মরত বেঞ্জ সহকারি কামাল হোসেনের ঊপস্থিতিতে জিআরও ফারুক হোসেন এর কাছে ২০৭/২০১২ মামলার আদেশের বিষয় জানতে চায়। জিআরও ফারুক হোসেন বলেন, ঐ মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করা হয়েছে। এই কথা বলার পরে মেয়র শাহাদত বলেন , চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেষ্ট আমার বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করেছে? সে কি ফাজলামো পেয়েছে? ,ঐ সময় অ্যাড. রুহুল আমিনও উপস্থিত ছিলেন। অফিস-সহকারিরা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেষ্ট কে জানান, মেয়র নাকি ৫ হাজার লোক নিয়ে তার বিরুদ্ধে মিছিল করবেন। ঐ দিন শাহাদত হোসেন বেলা পৌনে ১২ টার সময় শতাধিক লোক জন নিয়ে আদালতের সামনে পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখান। এমনকি আদালতের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। ঐ সময় মেয়র বলেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেষ্ট ২৪ ঘন্টার মধ্যে বরগুনা ত্যাগ না করলে তিনি আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবেন। এমন অভিযোগ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেষ্ট বরগুনা থানায় প্রেরণ করলে ২৪ জুন দ্রুত বিচার আইনের ৪/৫ ধারায় এজাহার রুজু করেন ঐ সময়কার বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
তবে আদেশ নামায় বরগুনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান উল্লেখ করেন, ‘বিজ্ঞ কৌসুলীর বক্তব্য, রিভিশন মামলার দরখাস্ত এবং দাখিলি কাগজপত্র পর্যালোচনায় রিভিশনটি গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় গৃহীত হল।’ তিনি মূল মামলার নথি তলব করেন এবং প্রতিপক্ষের প্রতি নোটিশ ইস্যু করার আদেশ দেন।