মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মরহুম আজিজুর রহমানকে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই পুরস্কারে ভূষিত আজিজুর রহমানের পক্ষে ছোট ভাই জামাল উদ্দিন পদক গ্রহণ করেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ভূষিতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
পদকপ্রাপ্ত আজিজুর রহমান ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৪৩ সালে মৌলভীবাজার জেলার গুজারাই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আব্দুল সত্তার এবং মাতা কাঞ্চন বিবি। শ্রীনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক, মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক ও মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ হতে বি.কম. ডিগ্রী অর্জন করেন।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হোন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ কারাবরণ করার পর ৭ এপ্রিল মুক্তিবাহিনী কর্তৃক জেল ভেঙ্গে সিলেট কারাগার থেকে মুক্তিবাহিনী কর্তৃক মুক্ত হোন। ২ মে পাকবাহিনীর মৌলভীবাজার আক্রমণের পর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে যোগ দেন। ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মৌলভীবাজারকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন।
১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে এবং ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ ও রেডক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ১৮ আগস্ট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি ছাড়াও স্বাধীনতা পদক পেলেন- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ (মরণোত্তর), শহীদ বুদ্ধিজীবী মুহম্মদ আনোয়ার পাশা (মরণোত্তর), চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুক্তাদির এবং সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারতেশ্বরী হোমসকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়েছে।