মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: আগামী ২৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারণায় চলছে ভোটের আমেজ । নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের প্রচার এখন তুঙ্গে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীরা দোয়া আর ভোট চাইছেন, দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১১ জন মহিলা কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্তিতা করছেন। আওয়ামীলীগ মনোনীত বর্তমান মেয়র আবুল ইমাম মোঃ কামরান চৌধুরী, বিএনপি মনোনীত আনোয়ারুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ সাইদুল ইসলাম এই তিনজনকে সরেজমিনে গিয়ে ব্যাপকভাবে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে। প্রার্থী ও ভোটারদের অনেকের মধ্যে নেই স্বাস্থ্যবিধি, মাস্ক ছাড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। এমনকি আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থী ও কিছু কাউন্সিলরের মুখে ছিল না মাস্কের ব্যবহার। পৌরসভার রাস্তাঘাট, বাজার-হাট,পাড়া-মহল্লায় ছেয়ে গেছে মেয়র পদপ্রার্থী ও কাউন্সিলরদের হরেক রকমের পোস্টারে। ভোটারদের মাঝে নির্বাচনকে ঘিরে রয়েছে নানা কৌতুহল! কে হচ্ছেন পৌর মেয়র? কে নির্বাচিত হলে উন্নয়ন হবে? মাঠের অবস্থান কার ভালো রয়েছে? যেই নির্বাচিত হোক না কেন যাতে পৌরবাসীর দোরগোঁড়ায় সেবা পৌঁছে দেন সেটাই সচেতন মহলের প্রত্যাশা। সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,বড়লেখা পৌরসভা কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের লক্ষ্যে দলের মার্কা দেখে নয়, যোগ্য প্রার্থী দেখেই তারা ভোট দিতে চান।
আওয়ামীলীগ মনোনীত বর্তমান মেয়র আবুল ইমাম মোঃ কামরান চৌধুরী বলেন,বিগত নির্বাচনে পৌর এলাকার মানুষ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছে। তখন পৌরসভার সরকারী ও বিভিন্ন পর্যায়ে ঋণগ্রস্ত ছিল। রাস্তাঘাট, বৈদ্যুতিক লাইট, বিশুদ্ধ জল ও জলাবদ্ধতা সহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ছিল। আমি রাস্তাঘাটের ৬০ ভাগ সমস্যা দূর করেছি বাকিগুলো টেন্ডারে আছে নতুবা সমাধান হতো। এলইডি লাইট দ্বারা শহর আলোকিত ও পাথারিয়া পাহাড় থেকে নির্গত বৃষ্টির পানি শহরের পূর্ব দিকে ঢুকে পশ্চিম দিকে এসে দুইএকদিন স্থায়ীত্ব জলাবদ্ধতা নিরসনে শাপলা ও নিকুলি ছড়ার ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করেছি। পৌর উন্নয়নে কিছু কাজ এখনো বাকি রয়েছে। সকল উন্নয়ন মূলক কাজ বিবেচনা করে, সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ধারাবাহিকতার লক্ষ্যে মাননীয় পরিবেশ মন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পৌর এলাকার মানুষ নৌকার প্রতীকেই পুনরায় নির্বাচিত করবে।
বিএনপি মনোনীত আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,গণতন্ত্রকে সমুন্নত রেখে জনগণের ভোটদানের অধিকার ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় নির্বাচনে এসেছি। পৌরসভার জরাজীর্ণ নাজুক অবস্থা থেকে উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে ধানের শীষ প্রতীকে মানুষের গনজোয়ার বিরাজ করছে। আমাদের রুখে দিতে নেতাকর্মীদের উপর অহেতুক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষের যে সাড়া পেয়েছি, সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হলেও আমাদের বিজয় নিশ্চিত।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল প্রতীকের মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, পৌর এলাকার মানুষের দুর্ভোগ ও সমস্যার কোন অন্ত নেই। ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ব্রীজের পরিবর্তে শাকু, কাঁচা রাস্তাঘাট দেখলে মনে হয় এগুলো আদিম যুগের,কোন সংস্কার হয়নি। বয়স্ক ও বিধবা ভাতা থেকে অনেকেই বঞ্চিত। মানুষের বাড়ি বাড়ি যেখানেই যাচ্ছি ভোটাররা সাদরে গ্রহণ করছে। অতীতে সবসময় মানুষের পাশে থেকে সেবামূলক কাজ করেছি, বর্তমানে আছি এবং ভবিষ্যতে থাকবো। পৌর এলাকার সকল সমস্যার সমাধান দূর করে মডেল ও আদর্শ পৌরসভা রূপান্তরিত করাই আমার লক্ষ্য। পৌর এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে মোবাইল প্রতীকের প্রতি মানুষের যে গণজোয়ার উঠেছে ২৮ তারিখের ভোটের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করবে। মানুষের গণজোয়ার কোন শক্তি দিয়ে ঠেকানো সম্ভব না। ইনশাআল্লাহ!