নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বাবা শরফুদ্দিন আনসারী ছিলেন ব্যবসায়ী। বঙ্গবন্ধু হত্যার আগ পর্যন্ত চার ছেলে, ছয় মেয়েকে নিয়ে ভালোই চলছিল শরফুদ্দিনের ব্যবসা ও সংসার। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তাঁদের পরিবারকে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় নির্যাতনের শিকার হন তখনকার যুবনেতা মো. সাহাবুদ্দিন। সাজানো মামলায় তাঁকে জেলে পাঠানো হয়। তাঁর মেজো ভাই মো. শামিম আকতার গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে যান ভারতে। অন্যরা এখানে-সেখানে পালিয়ে থাকতেন। এক পর্যায়ে বাবার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। জায়গাজমিও বিক্রি করে দিতে হয়।
মো. শামিম আরো বলেন, ‘ভাই জেলে যাওয়ার পর আমরা আর্থিক সংকটে পড়ে যাই। তখন আমরা ছয় বোন, তিন ভাই বহুত বিপদে পড়ি। অনেক কিছু বিক্রি করতে হলো। আব্বার জায়গা বিক্রি করে দিতে হলো, আমার আব্বার সব জায়গা ছিল, তা বিক্রি করতে হলো, বাড়ি বিক্রি হলো। সব কিছু বিক্রি করে দিয়ে আমাদের করুণ জীবনযাপন চলছে, আমাদের লাইসেন্সটা…মাত্র ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হলো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চার ভাই, ছয় বোন। সবার বড় মো. সাহাবুদ্দিন ভাই। বড় ভাই আমাদের ৯ ভাই-বোনকে বটবৃক্ষের ছায়ার মতো আগলে রাখেন সব সবময়।…সবচেয়ে বড় কথা হলো আমার বাবা যেমন ছিলেন পরিবারের প্রধান, বাবার মতোই আমার বড় ভাই আছেন, তিনি আমাদের সব সময় দেখাশোনা করেন। তিনি আমাদের দিকনির্দেশনা দিতেন কিভাবে লেখাপড়া করতে হবে। আমাদের খুব ভালোবাসেন, আমার বড় ভাই সব সময় মিষ্টিমুখ করে কথা বলতেন সব ভাই-বোনের সঙ্গে। জোরে আমাদের কখনো ধমক দেন নাই। বাবার মৃত্যুর পর আমাদের আগলে রাখছেন বড় ভাই।’
মো. সাহাবুদ্দিনের বাবা শরফুদ্দিন আনসারী ২০০০ সালের ১৪ আগস্ট মারা যান। আর মা খায়রুন্নেসা মারা যান ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর।
মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন- এই খবর প্রথম শোনার পর কেঁদে ফেলেছিলেন জানিয়ে মো. শামিম বলেন, ‘প্রতিক্রিয়া ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। যখন আমি নিউজে শুনি তখন কেঁদে ফেলছিলাম, যে এত বড় সম্মানের জায়গা আমার বড় ভাইকে দিছেন, আমার চোখ থেকে পানি পড়ে গেছিল। আল্লাহর কাছে হাজার হাজার কোটি কোটি শুকরিয়া আদায় করি। আমাদের আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই। পাবনার কৃতী সন্তান হিসেবে তাঁকে যে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন, এর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, আমাদের পরিবার কৃতজ্ঞ।’
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন