মেধা বিকাশের অন্যতম উৎস বই। একসময় প্রজন্ম বই নিয়ে ব্যস্ত থাকত। দুঃখজনক হলেও সত্য, এটি গাণিতিক হারে দিন দিন কমছে। শিক্ষার হার বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই অনুপাতে পাঠক বাড়েনি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যালয় আর কোচিং সেন্টারে দৌড়াতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তক ছাড়া অন্য বই পড়তে আগ্রহ হারাচ্ছে। এটিও অস্বীকার করার জো নেই যে, পাঠ্যপুস্তককে এড়িয়ে শর্ট নোটে ঝুঁকে পড়ছে দেশের আগামীর কান্ডারিরা।বর্তমান তরুণদের মধ্যে বড় অংশ ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি বেশি ঝুঁকেছে। এখন বই পড়ার নেশা যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে গেছে। যান্ত্রিক ব্যস্ততা ও তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে বই পড়ায় মানুষের অনীহা এসে গেছে। এটি আমাদের সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বহুভাষাবিদ ও পন্ডিত ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, মানুষের জীবনে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন, আর তা হচ্ছে বই, বই এবং বই। বই মূলত মানুষের আত্মার খোরাক। সেই জন্য ওমর খৈয়ামের মুখে শোনা যায়, “রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে কিন্তু বই থেকে যাবে অনন্ত যৌবনা।” বই পড়ার অভ্যাস যেন এখন দুর্লভ বৈশিষ্ঠ্যে পরিণত হয়ে পড়েছে। অথচ বই জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের বাহক। বই বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ঘটায়। বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয় না। বই পাঠককে আনন্দ ও জ্ঞান দান করে। তাই বিশেষ করে যুবসমাজকে বই পড়ার চর্চা ও অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে তরুণ প্রজন্ম হয়ে উঠবে বইয়ের আলোর আলোকিত ও জ্ঞানে সমৃদ্ধ।
মুহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ
আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।