অনলাইন ডেস্ক:
করোনাভাইরাসে ‘বড় বিপর্যয় এড়িয়েছে’ বলে আওয়ামী লীগের এক ওয়েবিনারে দাবি করা হয়েছে। ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবেলা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ দাবি করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণি বলেন, করোনাভাইরাসের সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ব্যাপক সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। যেখানে বিভিন্ন দেশে এখনও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে সেখানে বাংলাদেশ করোনা মোকাবেলায় অনেকটাই ভালো অবস্থানে উঠে এসেছে। যেখানে অনেক উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতি এখন ঋণাত্মকের দিকে চলে গেছে। সেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতি আগের মতোই সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। এর সবকিছুই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে।
তিনি বলেন, এই দুর্যোগে শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এক কোটি পরিবারের বেশি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছেন করোনা মোকাবেলায়, তেমনি তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকেও সমানতালে ব্যবহার করেছেন। মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে এই দুর্যোগে আমরা আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে অনেক তৃণমূলের নেতাকর্মীদের হারিয়েছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা মোকাবেলায় মাত্র ১৫ দিনে ২০০০ ডাক্তার ও ৫০০০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ যেই নিয়োগ হতে আমাদের এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যেত। একজন বিচক্ষণ নেতা যখন থাকে তখন যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব। দেশ এগিয়ে যায়। করোনার সেকেন্ড ওয়েভের যে সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে তার জন্যেও আমরা প্রস্তুত আছি।
আমরা জেলা কমিটিকে চিঠি দিয়েছি মানুষকে সচেতন করার জন্যে এবং সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করছি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, লকডাউনের শুরু থেকেই মানুষকে ঘরমুখী করার জন্য আমাদের প্রশাসন মাঠ পর্যায়ে কাজ করা শুরু করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিচক্ষণতার সাথে কোন কাজটি কখন করতে হবে, বিশ্বে কোথায় কী হচ্ছে সব কিছু স্টাডি করে তিনি বার বার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশনা দেন। জেলা-উপজেলায় মানুষকে সচেতন করতে আমাদের জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা এগিয়ে এসেছে। লাশ দাফন থেকে শুরু করে ত্রাণ কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে সাধারণ ছুটির মধ্যে এবং আমাদের দলের কর্মীরাও আন্তরিকতার সাথে একেবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ত্রাণ থেকে শুরু করে সব ধরনের সাহায্য করেছে। এমনকি বন্যা পরিস্থিতিতে জনপ্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে মিলে ৬৬টি দিন সাধারণ ছুটির মধ্যে খাবার, অর্থ সহায়তা করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে সকলের সহযোগিতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শীতায় আজকে আমরা দক্ষতা ও যোগ্যতার বিষয় তৈরি করতে পেরেছি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২২ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন- দরিদ্র, অসহায় ও কর্মহীন মানুষদের খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করার জন্য। এরপরে আমরা ১ কোটি ২৫ লক্ষের একটি ডেটাবেজ তৈরি করে খাদ্য সহয়তা প্রদান করি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ২ লক্ষ ১১ হাজার ১৭ মেট্রিক টন চাল, ৯৫ কোটি ৮৩ লক্ষ ৭২ হাজার কোটি টাকা নগদ এবং শিশু খাদ্যের জন্য আমরা ২৭ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা আমরা দিয়েছি।
আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সকল কাজ ঠিকমতো পরিচালিত হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জেলার সাথে ভিডিও কনফারেন্স করে সকল কাজের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশে বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতি ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার দূরদর্শী নেতৃত্বে ক্ষুধায় কেউ মারা গেছে এমন খবর পাওয়া যায়নি। ওনার জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতায় আমরা করোনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। এই করোনায় গত আট মাসে বাংলাদেশ ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা আয় করতে সক্ষম হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি।