বরগুনা প্রতিনিধি:
জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা শেষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীর নের্র্তত্বে ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর আতর্কিত হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বরগুনার সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। (২০-আগষ্ট) শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রেসক্লাবে এ তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন । সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তাফা কিসলু। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ মকবুল স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস আলোচনা সভা চলাকালীন সময় ছাত্র-জীবনে ছাত্র-দলের সাথে সম্পৃক্ত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ,লীগের সিনিয়র নেতাদের সামনে ছাত্রলীগের নিরীহ কর্মীদের বেদড়ক লাঠিচার্জ করে রক্তাক্ত জখম করে । পরে আহত শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেলে সেখানোও পুলিশ পাশবিক হামলা চালিয়ে আহতদের হাসপাতাল ত্যাগে বাধ্য করে। এ ঘটনায় জেলা আ,লীগের সকল অঙ্গ-সংঘঠনের নেতাকর্মীরা দায়ী পুলিশের শাস্তি দাবী করে। সেখানে ছাত্রলীগের তথাকথিত নব-গঠিত পকেট কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলন করে নির্যাতনকারী পুলিশ সদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং যাদের লাঠিচার্জ করা হয়েছে তারা ছাত্রলীগের কেউ নয় এমন বক্তব্য দেওয়ায় এ অ-ছাত্র ও জামাত-বিএনপি উত্তর সুরী নিয়ে গঠিত ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় বরগুনার সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ১৭ জুলাই ছাত্রলীগের কমিটি গঠনতন্ত্র অনুসারে হয়নি। যাকে সভাপতি করা হয়েছে সে অ-ছাত্র ,কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার ছাত্রত্ব নেই। সাধারণ সম্পাদক পদে যাকে দেওয়া হয়েছে তার পরিবার সরাসরি জামাত-বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত সংবাদ সম্মেলনে এমনটি দাবী করেন বরগুনার সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বরগুনা জেলা শাখার সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ,সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব আ.রশিদ বলেন, এখানে সঠিক নিয়মে বরগুনা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়নি। ১৫ আগষ্ট যে ঘটনা বরগুনায় ঘটেছে সেজন্য কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ দায়ী । অচেনা-অপরিচিত ছেলেদের দিয়ে বরগুনার ছাত্রলীগের কমিটি দিয়েছে তারা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আহব্বান যাতে বরগুনার ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করা হয়।
এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ মকবুল, সাবেক সাধারন সম্পাদক আলমগীর হোসেন,সাবেক সভাপতি জামাল হোসেন, তৌহিদ মোল্লা, জুবায়ের আদনান অনিক, পুলিশের লাঠিচার্জে আহত সবুজ মোল্লাসহ আহত আরও শতাধিক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন ।
উল্লেখ্য ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রাঙ্গণে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর বেদড়ক লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, ১৫-আগষ্ট সোমবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৭ তম শাহাদাৎ বার্ষীকি ও জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শোক দিবসের এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। সভায় ছাত্রলীগের একাংশ বর্তমান কমিটির সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজার কর্মীরা শোক দিবসের আলোচনা সভা স্থল শিল্পকলার সামনে দিয়ে বঙ্গবন্ধু কপ্লেক্সে যাওয়ার সময় দু গ্রুপের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে । কিন্তু ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি সবুজ মোল্লা অংশের নেতা কর্মীরা শিল্পকলা একাডেমীর ওপর থেকে ইট নিক্ষেপ করেছে এমনটি জানায় পুলিশ। পরে পুলিশ উভয় পক্ষকে হঠিয়ে দিয়ে পরিস্তিতি শান্ত করে। পুলিশের দাবী এ সময় জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা স্থল শিল্পকলা একাডেমীর ওপর থেকে ইট মেরে পুলিশের পিক ভ্যানের সামনের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলেছে। সে কারণে অতিররিক্ত পুলিশ সুপার তারিক হাসান ও মহরম আলীর নের্তৃত্বে পুলিশ শোক দিবসের আলোচনার শেষ পর্যায় সভা স্থল শিল্পকলা একাডেমীর মুল গেট আটকিয়ে দেয়। সভা শেষে বরগুনা-১ আসনের এমপি এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু শিল্পকলা একাডেমী থেকে বের হলে অতিররিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী তার কাছে পুলিশের গাড়ীর ভাংচুরে অভিযোগ তোলেন।
পরে পুলিশ শিল্পকলার পকেট গেট খোলা রেখে কিছু লোক বের করে দিয়ে এমপি,র সামনেই ছাত্রলীগ কর্মীদের লাঠিচার্জ করে । বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে শিল্পকলা একাডেমীর মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে আসা অনেক নারী , শিশু ,ছাত্র-ছাত্রী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সব শিশুরা পুলিশের বে-পরোয়া লাঠিচার্জ দেখে ভয় পেয়ে কেঁদে ফেলে। সংবাদ কর্মীদের সহয়তায় কিছু নারী ও শিশুরা ওখান থেকে বের হয়ে যায়। এ সময় পৌর-মেয়র মো.কামরুল আহসান মহারাজকে ঘটনা স্থলে দেখা যায়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।