Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
পানির নিচে দুবাই বিমানবন্দর, ব্যাপক বিশৃঙ্খলা
--সংগৃহীত ছবি

পানির নিচে দুবাই বিমানবন্দর, ব্যাপক বিশৃঙ্খলা

অনলাইন ডেস্কঃ

রেকর্ড বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে মরুভূমির দেশটির রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন এলাকা। এমনকি দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও পানিতে তলিয়ে গেছে। সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফ্লাইট চলাচল।

দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিস্থিতি সম্পর্কে যাত্রীদের সতর্ক করেছে এবং কিছু এলাকা পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে সেদিক এড়িয়ে চলতে বলেছে।  আরো উত্তরে, বন্যার পানিতে গাড়ি ভেসে গিয়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে করে গত রবিবার থেকে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৯ জনে পৌঁছেছে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দরটি। এ ছাড়া এয়ারলাইনস থেকে নিশ্চিতকরণ ছাড়া ১ নম্বর টার্মিনালে যাওয়া এবং বিমানবন্দরে ভ্রমণ এড়ানোর জন্য যাত্রীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এদিকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস এমিরেটস বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জনপ্রিয় এই পর্যটন শহর থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের জন্য চেক-ইন স্থগিত করেছে। এই সংস্থাটির সদর দপ্তরও দুবাইয়ে। কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, আরো বজ্রপাত, ভারি বৃষ্টি এবং শক্তিশালী বাতাসের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

৭৫ বছর আগে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে ওমানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী সংযুক্ত আরব আমিরাত গত মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজি ঘোষণা করেছে, ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আল-আইন অঞ্চলের খাতম আল-শাকলায় ২৫৪.৮ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে বছরে গড়ে ১৪০-২০০ মিমি বৃষ্টিপাত হলেও দুবাইয়ে বছরে সাধারণত মাত্র ৯৭ মিমি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। আর এপ্রিল মাসের মাসিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ৮ মিমি।

‘সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা’ 

দুবাইয়ে মূল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়া বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ পর্যটকের মধ্যে রয়েছেন কেট এবং অ্যান্ড্রু গোল্ডিং। তারা ১২ ঘণ্টা ধরে সেখানে ছিলেন। ৬২ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু বিবিসি নিউজকে বলেছেন, ‘আমি অন্য ফ্লাইটে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’ কেন্টের এই দম্পতি কেটের ৬০তম জন্মদিন উদযাপনের জন্য দুবাইয়ে এসেছিলেন।

তিনি আরো বলেন, “এখানে পরিস্থিতি চরম খারাপ। বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। এমিরেটসকে আমি সেরা এয়ারলাইনগুলোর মধ্যে একটি বলে মনে করি, কিন্তু এখানে তাদের কোনো কর্মী নেই বা তথ্য নেই। কোনো ধরনের পেশাদারত্ব নেই, কোনো পরিষেবা নেই। এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়লে কী করতে হবে সেই দুর্যোগ পরিকল্পনাও এমিরেটসের নেই। বড় কোম্পানিগুলো সাধারণত এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই পরিকল্পনা করে রাখে। কিন্তু তারা করেনি।”

‘যাত্রীরা চিৎকার করছে’

বিমানবন্দরের অন্য স্থানে দক্ষিণ ইয়র্কশায়ারের রদারহ্যাম থেকে আসা অ্যান উইং তার স্বামী এবং তিন সন্তানের সঙ্গে লন্ডন হিথ্রোতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অপেক্ষা করছেন। তাদের ফ্লাইটটি এক ঘণ্টা দেরি হয়েছে। অ্যান উইং জানান, সকাল ৮টা থেকে চেষ্টা করেও এমিরেটসের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। যাত্রীরা চিৎকার করছিল, সেখানে তাদের কোনো কর্মী ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পশুদের মতো গাদাগাদি করে আছি। যা ভয়াবহ, বিপজ্জনক এবং অমানবিক। একেবারেই হাস্যকর বিষয় এটা।’ তিনি জানান, তার পরিবার দুপুর থেকে খাবার পায়নি। তাদের শুধু ছোট কার্টনে কিছু পানির বোতল দেওয়া হয়েছে। দুবাই ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল নামে পরিচিত দুবাইয়ের অন্য একটি বিমানবন্দরের যাত্রীদের সঙ্গে বিবিসির কথা বলেছে। তারাও খাবার ও পানির সংকটের কথা জানিয়েছে।

সূত্র : বিবিসি

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply