অনলাইন ডেস্ক:
রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে বিএনপির নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। এর সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরও জড়িত বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলটির নীতিনির্ধারকরা। তাঁরা বলেছেন, লন্ডন ও দুবাইয়ে বসে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। গণতান্ত্রিক ও স্থিতিশীল পরিবেশ বিনষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে। এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তাঁরা বলেছেন, এর দাঁতভাঙা জবাব দিতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, বিএনপির এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। বৈশ্বিক মহামারি করোনার এই মানবিক সংকটের মধ্যেও তারা ধারাবাহিক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।’ তিনি আরো বলেন, বাসে আগুন দিয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কারণে জনগণ বিএনপিকে বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। নিরীহ মানুষের জীবন ও সম্পদহানির মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটের অপচেষ্টা চালানো দলটির পুরনো অভ্যাস বলেও দাবি করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
একই দিন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা (বিএনপি) অগ্নি-সন্ত্রাস চালিয়ে সাড়ে তিন শ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এই অগ্নি-সন্ত্রাস বিএনপির পুরনো স্টাইল।’ তিনি আরো বলেন, দেশ স্বাধীন হবে তা তারা আশা করেনি। তাই এ দেশের প্রতি তাদের কোনো মায়া-মমতা, ভালোবাসা নেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, স্থিতিশীল পরিবেশ তাদের ভালো লাগে না। তাই বিএনপি এ দেশের সব কিছু নস্যাৎ করে ভীতসন্ত্রস্ত পরিবেশ রাখতে চায়।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি এবং তাদের মিত্র স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি লন্ডন ও দুবাইয়ে বসে যা তা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা স্পষ্ট ও প্রমাণিত যে তারা মানুষকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্যই এসব (বাসে আগুন) করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘এটা সুপরিকল্পিত যে জঙ্গিদের তারা দায়িত্ব দিয়েছে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতে। কারণ পরিকল্পিত না হলে একই দিন রাজধানীর ৯টি স্থানে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটত না।’
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে বিএনপি ও তার দোসররা যুক্ত ছিল। তিনি আরো বলেন, ‘দেশের মানুষ ভালোভাবেই জানে অতীতে কারা এভাবে বাস পুড়িয়েছে, কিভাবে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেছে এবং শত শত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, যেভাবে যাত্রীবেশে বাসে উঠে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, গতকাল (বৃহস্পতিবার) যে ৯-১০টি বাস পোড়ানো হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে ২০১৩-১৪ সালের ঘটনার মিল আছে। এই ঘটনার সঙ্গে বিএনপি এবং তার দোসররা যে যুক্ত, এটি সহজেই অনুমেয়।’ দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এর আগে দুপুরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়েও একই অভিযোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।