স্টাফ রিপোর্টার:
অবিভক্ত বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী, সর্বভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নামে পদ্মা সেতুর নামকরণের দাবি জানিয়েছে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদ ও বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ১৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় নেতার মাজার চত্ত্বরে পদ্মাসেতুর নাম শেরে বাংলার নামে নামকরণের দাবীতে আয়োজিত মানবন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ এ দাবী জানান।
সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বাঙালি মুসলমানদের জন্য প্রথম যদি কেউ কিছু করে থাকেন তবে সেটা ফজলুল হক সাহেব করেছেন। ঋণ সালিশী বোর্ড গঠনের মাধ্যমে তিনি কৃষকদের ঋণের বোঝা থেকে মুক্ত করেছিলেন। বাংলা ভাগের বিভক্তিতে যেসব নেতারা সোচ্চার ছিলেন তার মধ্যে শেরে বাংলা ও সোহরাওয়ার্দী ছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেই বাংলা বিভক্ত হয়েছিল।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বহু আগে থেকেই শেরে বাংলা ফজলুল হকের নামে নামকরণের দাবী রয়েছে। তাই পদ্মা সেতুর নামকরণ ফজলুল হকের নামে করার যে দাবি তা সরকারের মেনে নেয়া উচিত।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক আমাদের মাঝে বেঁচে নেই; কিন্তু বাঙালি সমাজ যত দিন বেঁচে থাকবে, ততদিন তাদের হৃদয়ে ফজলুল হক চিরজীবী। একমাত্র ফজলুল হকই বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে বাঁচাতে পারে। সে মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত সাচ্চা মুসলমান। খাঁটি বাঙালিত্ব ও সাচ্চা মুসলমানিত্বের এমন সমন্বয় খুবই কমই দেখা গেছে।
তিনি আরো বলেন, শেরে বাংলা সাহিত্য, কূটনীতি বা রাজনীতিতে রেখে গেছেন অবিস্মরণীয় অবদান। বড় বড় পদে উচ্চাসীন হয়েও ভুলে যাননি তার মূল। জনগনের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে থেকেছেন সর্বদা। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান আমলে সমানতালে করেছেন রাজনীতি। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত নবযুগ পত্রিকায় অর্থায়ণ করেছেন, প্রকাশ করেছেন। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অকুণ্ঠ এবং সংগ্রামী জীবন যেকোন মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে সক্ষম।
জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের মহাসচিব আর কে রিপন, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন রাজু, দপ্তর উপকমিটির সদস্য মারুফ সরকার, শহিদুল ইসলাম, চাখারবাসীর পক্ষে কৃষক মোস্তফা কামাল মন্টু, এডভোকেট সৈয়দ মনিরুজ্জামান শ্রাবন, এডভোকেট মাইনুল ইসলাম, মো. ইকবাল হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম শিকদার, মিলন মল্লিক প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে সেতু হয়েছে। এখন সময়ের দাবি পদ্মাসেতুর নামকরণ শেরে বাংলার নামে। তিনি আরো বলেন, আমরা যদি কৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে নিজেদেরকে প্রকাশ করতে চাই তাহলে মনের সংকীর্ণতা দূর করে যারাই রাষ্ট্রে রয়েছেন তাদেরকে অনুরোধ করবো পদ্মাসেতুর নামকরণে কোনরকম সংকীর্ণতায় ভুগবেন না।
তিনি আরো বলেন, শেরে বাংলার চেতনাকে ধারণ করতে পারলে জাতির এই গভীর সংকট আর থাকবে না।
মানববন্ধন শেষে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ফাতেহা পাঠ করেন।