নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরজব্বর ইউনিয়নের নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে এ হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
.
ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, নৌকায় ভোট দেওয়ায় তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন তার কর্মী-সমর্থকরা।
.
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ফলাফল ঘোষণার পর থেকে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সমর্থকরা যেখানে নৌকার সমর্থক পাচ্ছেন তাদেরকে মারধর করছেন। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১ টার দিকে ১ নং ওয়ার্ডের চেওয়াখালী বাজার এলাকার নৌকার কর্মী নয়নের বাড়িতে হামলা করে। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ৬ নং ওয়ার্ডের আবদুল্লা মিয়ার হাট এলাকায় সিএনজিতে থাকা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য শাহ আলম (৩০) ও হারুন মিস্ত্রির উপর হামলা করে। এরপর ২ নং ওয়ার্ডের শিমুলের চা দোকান, ডা. মনসুরের ওষুধের দোকান ও ইউসুফের মুদি দোকানে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। এলাকার পুরুষরা ভয়ে পালিয়ে গেছেন। আতঙ্কে আছে এলাকার নারী ও শিশুরা।
.
চরজব্বর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের চেওয়াখালী বাজার এলাকার নৌকার কর্মী নয়ন বলেন, নৌকার পক্ষে ভোট করায় বিএনপি জামায়াতের লোকজন নিয়ে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা আমার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। আমি বর্তমানে হত্যার ভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্য স্থানে আছি। আমার বাসায় গিয়ে আমার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
.
হামলার শিকার ২ নং ওয়ার্ডের চা দোকানের মালিক শিমুল বলেন, আমি কেনো নৌকার জন্য কাজ করেছি তাই প্রকাশ্যে এসে আমার দোকানে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। আমার দোকানের মালামাল ও ক্যাশ ভেঙে টাকা নিয়ে গেছে। আমাদের কথা শুনার মতো কেউ নেই।
.
হামলার শিকার সিএনজিতে থাকা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য শাহ আলম বলেন, আমি আমার স্ত্রী সন্তানসহ মাইজদী যাওয়ার পথে আনারসের সমর্থকরা আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। আমার হাত ভেঙে দিয়েছে। আমি বর্তমানে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি।
.
চরজব্বর ইউনিয়নে পরাজিত নৌকার প্রার্থী তরিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ফলাফল ঘোষণার পর থেকে আমার কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ঘরে হামলা ভাঙচুর তাণ্ডব চালানো হয়েছে। ভয়ে কর্মী-সমর্থকরা বাড়ি থাকতে পারছেন না।
.
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ওমর ফারুক । তার দাবি, প্রত্যেক ওয়ার্ডে ৭-৮ জন মেম্বার প্রার্থী ছিলেন। তাদের সমর্থকরাই বিরোধ, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরে জড়িয়ে পড়েছেন। আমি আমার জায়গা থেকে শান্তির জন্য চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে আমি কোনো দায় নেবো না। অপরাধীদের আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে।
.
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হকের মুঠোফোনে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
.
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) দীপক জ্যোতি খীসা বলেন, যেসব এলাকা থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ গ্রহণসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।