অনলাইন ডেস্ক:
নেতৃত্বের দুর্বলতা আর অস্বচ্ছ রাজনীতিই বিএনপিকে ভোটের রাজনীতি থেকে দিন দিন পিছিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ রবিবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে নিজের সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাঁরা (বিএনপি নেতৃবৃন্দ) জনগণের কাছে ভোট না চেয়ে সরকারের অন্ধ সমালোচনা ও মিথ্যাচারকেই ব্রত হিসেবে নিয়েছেন, যা প্রকারান্তরে তাঁদের রাজনৈতিক অস্তিত্বকে দুর্বল করে তুলছে।
‘পৌরসভা নির্বাচনে যাঁরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছেন, তাঁদেরকে ভবিষ্যতে দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে আর বিবেচনায় আনা হবে না’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে যাঁরা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না এবং দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তাঁদের জয় হোক কিংবা পরাজয় হোক, পরবর্তী নির্বাচনে আর মনোনয়ন পাবেন না তাঁরা- এটাই আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি।
গতকাল দ্বিতীয় ধাপে ৬০টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয়ী সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এ বিজয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও মানবিক নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়া এবং উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা ও সমৃদ্ধির বিজয়।’ তিনি এ বিজয়কে গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার বিজয় বলেও মত প্রকাশ করেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক হিসেবে বলা হয়েছে, গতকালের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিও ছিল আশাব্যঞ্জক। সূত্র মতে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬০ থেকে ৭০ ভাগ।
ওবায়দুল কাদের জানান, ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি শেখ হাসিনা সরকার ও নির্বাচন ব্যবস্থার উপর জনগণের অব্যাহত আস্থারই বহিঃপ্রকাশ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যাঁরা দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান, নির্বাচন নিয়ে কথায় কথায় হতাশা প্রকাশ করেন, গতকালের নির্বাচনে জনগণ তাঁদের উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারের জবাব দিয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলেছেন ‘ভোটকেন্দ্র সরকারি দলের দখলে ছিল’- এই অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘তাহলে তাঁদের চারজন প্রার্থী কীভাবে বিজয়ী হলেন?’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা মাঠে না গিয়ে ঘরে বসে শীত উদযাপন করেন। কর্মীরা ভোট দিতে চাইলেও মাঝদুপুরে ভোট বর্জনের সংস্কৃতি তাঁদেরকে তাড়া করে।’
৬০টি পৌরসভার মধ্যে ২৯টিতে ইভিএম এবং ৩১টিতে ব্যালটে ভোট হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইভিএমে জনগণ স্বাচ্ছন্দ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। তাদের মধ্যে ছিল না কোনো জড়তা।’ ইভিএমে ভোট প্রদানে জনগণের আগ্রহ এখন অনেক বেড়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে নির্বাচন মানেই হানাহানি, সংঘাত আর প্রাণহানি লেগেই থাকতো। বর্তমান সরকারের সময়ে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন ইউনিটে নির্বাচনে হানাহানি ও অস্ত্রের মহড়া বন্ধ হয়েছে।’
সিরাজগঞ্জে যে সংঘাত হয়েছে তা দুঃখজনক উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দায়িত্ব পালন করেছেন।’ তাঁদেরকে ভবিষ্যতে আরো কঠোর ভূমিকা পালন করারও নির্দেশ দেন তিনি।