নাসিরনগর পুকুর দখলে নিতে ভূমিদস্যুর হামলা, আহত ১২।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সালেক মোল্লার জমি জোরপূর্বক দখল নিতে দলবল নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে ভূমিদস্যু জানে আলমের বিরুদ্ধে৷
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাতিজা বাদী হয়ে ২৬ জনকে আসামি করে নাসিরনগর থানায় একটি মামলা করেন৷ পরে পুলিশ একজনকে আটক করেছে৷
এলাকাবাসীর বক্তব্য জানা যায়, “আদালতের আদেশে দলিল সূএে মালিক হিসাবে নাসিরনগর উপজেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা আক্তার সরেজমিনে গিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে জায়গা সালেক মোল্লাকে বুঝিয়ে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। এরপর থেকেই জানে আলমসহ তার লোকজন তাদের সম্পত্তি দখল করতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানান”।
গত ১০ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে একটি হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সালেক মোল্লার ভাতিজা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২৬ জনকে আসামি করে নাসিরনগর থানায় একটি মামলা করেন৷ মামলা তদন্ত করে একজনকে আটক করে পুলিশ৷ ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের ডিঘর গ্রামের৷
থানায় লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীর ভাতিজা আনোয়ার হোসেন উল্লেখ করেন, ডিঘর মৌজার সাবেক ৯৮ হালে ১০২ দাগে ৪১ শতক পুকুর ও আশেপাশের অন্যান্য দাগের মোট ২৬৩ শতক পুকুর ও নাল ভূমির মালিক সালেক মোল্লা৷
ঘটনার দিন সালেক মোল্লা লোকজন পুকুরের জায়গায় সীমানায় গেলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা জানে আলমের নেতৃত্বে একদল লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে সালেক মিয়ার লোকজনের উপর৷ এ সময় হামলার ১২ জন আহত হয়৷ পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় গুরতর আহত তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়৷ অপর ৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়৷ এ ঘটনায় নুর আলম নামে একজনকে আটক করে পুলিশ৷
বাকি আহতরা হলেন, আনোয়ার হোসেন, সালেক মোল্লা, মিজানুর রহমান, সান্ত মিয়া, আব্দুল আজিজ, ডালিম মিয়া, রাকিব মিয়া৷ তারেক মোল্লা, হুমায়ুন মিয়া, আলামিন মিয়া, সামছুল হক৷
ভুক্তভোগী সালেক মোল্লার সাথে কথা বললে তিনি জানান, ২৬৩ শতক জায়গা আমার পৈত্রিক সম্পত্তি৷ কিন্তু জানে আলমসহ অপর আসামিরা আমাদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে ২৬৩২ শতক জায়গা সরকারি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়৷ পরে আমরা খাস খতিয়ান থেকে সম্পত্তি উদ্ধার করতে আদালতে মামলা করি৷ মামলায় আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেয়৷ পরে সরকার পক্ষ উচ্চ আদালতে আবেদন করলে সেখানেও আমাদের পক্ষে রায় আসে৷ উচ্চ আদালতে আদেশে বলা হয় জমির মালিককে জমি বুঝিয়ে দিতে৷ তখন নাসিরনগর উপজেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা আক্তার আমাদের জায়গার সীমানা নির্ধারণ করে লাল নিশান টানিয়ে দিয়ে আমাদের জমির দখল বুঝিয়ে দেয়৷ এরপর থেকেই জানে আলমসহ তার লোকজন আমাদের সম্পত্তি দখল করতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে৷ সর্বশেষ আমার পুকুরেও কাজ করতে গেলে তারা অর্তকিত হামলা করে ১২ জনকে পিটিয়ে আহত করেন৷ জানে আলমের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি৷ তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি৷
হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, থানায় আনোয়ার হোসেন নামে একজন মামলা দায়ের করেছে। একজন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলা তদন্ত চলছে বাকীরা পলাতক আছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।