নাইক্ষ্যংছড়ি( বান্দরবান ) প্রতিনিধি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে আবারো উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আজ শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে মায়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া দুটি মর্টার সেল সীমান্ত এলাকায় এসে পড়েছে। তুমব্রু সীমান্তের ৪০ / ৪১ নম্বর পিলারের কাছে রেজু আমতলী এলাকায় এই দুটি গোলা এসে পড়ে। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তুমব্র সীমান্তের ৪০/৪১ পিলারের বিপরীতে গা-ঘেষে মায়ানমার সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার থেকে সেখানে গোলাবর্ষণ ছোঁড়া হয়।
এতে সীমান্তের এলাকাবাসীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সূত্রে জানা যায়, গত বেশ কিছুদিন থেকে মিয়ানমার সীমান্তের রাখাইন রাজ্যের ‘খা মং সেক’ পাহাড়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সে দেশের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠি ‘আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে এই লড়াই শুরু হয়। কবেশ কয়েকদিন ধরে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জেট ফাইটার ও একাধিক হেলিকপ্টারের তৎপরতা বেড়েছে। হেলিকপ্টার থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠির লক্ষ্যবস্তুতে ছোঁড়া হচ্ছে অসংখ্য গুলিও বোমা। তাতে পাহাড়ের বনাঞ্চল দাউ দাউ করে জ্বলে উঠছে আগুণ।
আর এদিকে, সীমান্তে গোলায় এসে পড়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। কিন্তু এর পরও সীমান্ত এলাকায় নো ম্যান্স ল্যান্ডে গোলা বর্ষণ বন্ধ করেনি মায়ানমারের সেনাবাহিনী।
এখনো একের পর এক গোলা এসে পড়ায় সীমান্তে বসবাসকারী লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম সালমা ফেরদৌস বলেন, সীমান্তে বেশ কয়েকদিন ধরে ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ শুনা গেলেও সীমান্তের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিজিবি এবং পুলিশ বাহিনী সর্তক অবস্থানে রয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি সংঘটিত ঘটনাটি ঘটছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তাদের বিদ্রোহী গোষ্ঠির সাথে।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম সীমান্তে গোলাবর্ষণের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন সীমান্ত বসবাসকারী লোকজনদেরকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। এদিকে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি। সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় টহল বাড়িয়েছে বিজিবি।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগষ্ট মিয়ানমার দিক থেকে ছোঁড়া মর্টারের দুটি গোলা এদেশে এসে পড়ে।যদিও তাতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে চলমান স্থলযুদ্ধ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ।